স্টাফ রিপোর্টারঃ ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলায় তিনটি স্কুলের খেলার মাঠ চষে বীজতলা তৈরি করেছেন স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গরা।
কমিটি ও প্রধান শিক্ষকের অনুমতিতে শিক্ষার্থীদের খেলার মাঠে চলছে ধানের বীজ ফলন ও রোপনের কাজ।
উপজেলার দক্ষিন রাজাপুরের ইউসুফ আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ফিরোজা মজিদ বিদ্যালয় ও ৩১নং দক্ষিন রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠগুলো যেনো এখন ধান চাষের জমি।
অভিযোগ রয়েছে, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে অর্থের বিনিময় ম্যানেজ করে স্থানীয় প্রয়াত সেকেন্দার আলী হাওলাদারের ছেলে মোঃ মোশাররফ আলী হাওলাদার ট্রাক্টার দিয়ে দক্ষিন রাজাপুরের ইউসুফ আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৩১নং দক্ষিন রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খেলাধুলার মাঠকে ধান চাষের জমি বানাচ্ছেন। পাশাপাশি এ দুই প্রতিষ্ঠানের একটি মাঠে বর্তমান সময়ে শিক্ষার্থীরা খেলাধূলা করে আসেছিলো।
এদিকে শিক্ষার্থীদের খেলার মাঠ নষ্ট হওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার একাধিক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা বলেন, টাকার বিনিময়ে প্রধান শিক্ষক স্কুলমাঠ লাগিয়ে দিয়েছেন (ভাড়া দেয়া)। স্কুল বন্ধ থাকলেও শিক্ষার্থীরা এখানে ফুটবল খেলে। বর্ষা মৌসুমে গ্রামাঞ্চলের জনপ্রিয় খেলা ফুটবল। কিন্তু এখন আর খেলাধূলার সেই সুযোগ রইলোনা।
সরেজমিনে গেলে ইউসুফ আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও দক্ষিন রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে মোশারফ আলী হাওলাদার নামে এক ব্যক্তিকে জমি চাষ করতে দেখা যায়। জানতে চাইলে তিনি জানান, স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবু বক্কর সিদ্দিকের কাছ থেকে নগদ টাকার বিনিময়ে স্থানীয় যুবলীগনেতা মাইনুল ইসলাম স্কুলমাঠ চাষ করার অনুমতি নিয়েছেন।
এদিকে দক্ষিন রাজাপুরের ফিরোজা মজিদ বিদ্যালয়ের মাঠেরও একই অবস্থা। সেখানেও বীজতলা তৈরির অনুমতি দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। ওই মাঠেও চাষাবাদ করে ধানের বীজ বপন করা হয়েছিল। এখন ধানের চারাও বড় হতে শুরু করেছে।
এব্যাপারে ফিরোজা মজিদ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফিরোজ আলম জানান, স্কুলের দপ্তরী আমার অনুমতি নিয়েই বীজতলা তৈরী করেছে। এখন স্কুল বন্ধ তাই অনুমতি দিয়েছি।
অপরদিকে ইউসুফ আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক এর কাছে জানতে চাইলে তিনি টাকা নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না, সব কিছুই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি করেছে।
ইউসুফ আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. আলিম আল মাসুদ জানান, এখনতো সকল স্কুল বন্ধ, তাই স্কুল মাঠে বীজতলা তৈরী করলে এর সুবিধা কোন না কোন ভাবে সবাই ভোগ করবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মোক্তার হোসেন জানান, স্কুলের খেলার মাঠে বীজতলা তৈরীর কোন বিধান নেই। যদি কেউ করে থাকে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।