fbpx
সংবাদ শিরোনাম

নিম গাছের উপকারিতা

                                           
মোসফিকা আক্তার
প্রকাশ : শুক্রবার, ৯ জুলাই, ২০২১
নিম গাছের উপকারিতা

নিম ( বৈজ্ঞানিক নাম: azadirachta indicA) একটি ঔষধি গাছ যার ডাল,পাতা, রস সবাই কাজে লাগে। নিম একটি বহুবর্ষজীবি ও চিরহরিৎ বৃক্ষ। আকৃতিতে ৪০-৫০ ফুট পযর্ন্ত হতে পারে। ডালের চারদিকে দশ- বারো ইঞ্চি যৌগিক পত্র জন্মে।পাতার কাস্তের মত বাকানো থাকে এবং পাতার কিনারায় দশ- সতেরো টি করে খাঁজযুক্ত অংশ থাকে। পাতা ২.৫-৪ ইঞ্চি লম্বা হয়।

নিম গাছের এক ধরনের ফল হয় আঙুরের মতো দেখতে এই ফলের একটি বীজ থাকে। জুন জুলাইতে ফল পাকে এবং কাঁচাফল তেতো স্বাদের হয়। তবে পেকে হলুদ হওয়ার পর মিষ্টি হয়।ভারত এবং বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্রই নিম গাছ জন্মে।প্রাপ্ত বয়স্ক হতে সময় লাগে দশ বছর। নিম গাছ সাধারণত উষ্ণ আবহাওয়া প্রধান অঞ্চলে ভাল হয়।মাটির পিত্ত এই ৬.২-৮.৫ এবং বৃষ্টিপাত আঠারো – ৪৬ ইঞ্চি ও একশো বিশ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রা নিম গাছের জন্য উপযোগী। নিমের পাতা থেকে বর্তমানে প্রসাধনী ও তৈরী হচ্ছে। কৃমিনাশক হিসেবে নিমের রস খুবই কার্যকরী।

নিমের কাঠ খুবই শক্ত।এই কাঠে কখনো ঘুণ ধরে না।পোকা বাসা বাঁধে না।উইপোকা খেতে পারে না।এই কারণে নিম কাঠের আসবাবপত্র ও বর্তমানে তৈরি করা হচ্ছে। এছাড়া প্রাচীনকাল থেকেই বাদযন্ত্র বানানো জন্য কাঠ ব্যবহার করা হচ্ছে। এর উৎপাদন ও প্রসারকে উৎসাহ এবং অন্যায়ভাবে নিম গাছ ধ্বংস করাকে নিরুৎসাহিত করছে। নিমের এই গুনাগুলোর কথা বিবেচনা করেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একে একুশ শতকের বৃক্ষ বলে ঘোষণা করেছে। নিমের উৎপত্তি গ্রীষ্নমন্ডলীয় ভারত এবং দক্ষিন- পূর্ব এশিয়া এবং পশ্চিম আফ্রিকাতে এর আদিবাস মিয়ানমার পাতা,ফল,ছাল বা বাকল,নিমের তেল,বীজ অর্থাৎ এক কথায় নিমের সমস্ত অংশ ব্যবহার করা যায়।জুনের ৩০ তারিখ থেকে বীজ বপন শুরু হয়। বর্ষাকালের শেষ পযর্ন্ত বীজ বপন করা যায়।বীজ র্নাসারী বেড়ে পলিব্যাগের অথবা সরাসরি জমিতে লাগানো যেতে পারে।

চিরতা গাছের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে  

নার্সারীতে চারা জন্মানোর পর ৭-দশ সেমি উঁচু হলে তা লাগানো উপযুক্ত। সাধারণত বৃষ্টির সময়ে অথবা সেষ্টেম্বর মাসের প্রথম দিকে উত্তোলন করা ভালো। বিশ্বব্যাপী নিম গাছ,গাছের পাতা, শিকড় নিম,ফল ও বাকল ঔষধের কাঁচামাল হিসেবে পরিচিত। বর্তমান বিশ্বে নিমের কদর তা কিন্তু এর অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে ব্যবহারের জন্য। নিম ছত্রাকনাশক হিসেবে, কীট-পতঙ্গ বিনাশে,চ্যাগাস রোধ নিয়ন্ত্রণে ম্যালেরিয়া নিরময়ে দন্ত চিকিৎসায় ব্যথামুক্তি ও জ্বর কমাতে, জন্ম নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার করা হয়।নিমের পাতা রক্তের সুগার লেভেল কমতে সাহায্য করে। এছাড়াও রক্ত নালীকে প্রসারিত করে রক্ত সংবহন উন্নত করে। ভালো ফল পেতে নিমের কচি পাতার রস প্রতিদিন সকালে খালি পেটে পান করুন। সকালে খালি পেটে ৫টি গোলমরিচ ও দশ টি নিম পাতা বেটে খেলে তা ডায়াবেটিস কমাতে সাহায্য করে।

নিম পাতার উপকারিতাঃ
# নিম তেলে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন- ই এবং অ্যাসিড থাকে যা আমাদের ত্বক এবং চুলের জন্য খুবই উপকারী।
# নিমপাতা ব্যকটেরিয়া ও ছত্রাক ( ফাঙ্গাস) বিরোধী তাই ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাকের আক্রমনের হাত থেকে ত্বককে সুরক্ষিত করতে নিমপাতা খুবই কার্যকরী।ব্রনর সমস্যা থেকে দ্রুত নিস্তার পেতে নিমপাতা বেটে লাগাতে পারেন।
# ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে নিয়মিত নিমপাতার সঙ্গে কাঁচা হলুদ ভাল করে বেটে মেখে দেখুন।খেয়াল রাখতে হবে, মিশ্রণে নিমপাতার চেয়ে হলুদের পরিমান যেন কম হবে, তবে হলুদ ব্যবহার করার পর কয়েক ঘন্টা রোদ এড়িয়ে চলাই ভাল।
# দাঁতের জন্য নিমের ডাল খুবই উপকারী। মুখের র্দুগন্ধ দূর করতে আর দাঁতের ফাঁকে জীবাণু বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ রোধ করতে নিম বেশ কার্যকরী।
# কেটে ছড়ে গেলে বা পুড়ে গেলে ক্ষত স্হানে নিম পাতার রস ভেষজ ওষুধের মতো কাজ করে।
# নিম পাতা রোদে শুকিয়ে ভাল করে গুঁড়ো করে রেখে দিতে পারলে পরবতীকালে তা ফেস প্যাক হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# মাথায় ত্বকের চুলকানির সমস্যায় নিমপাতার রস খুবই কার্যকরী একটি উপাদান। নিমপাতার রস মাথায় নিয়মিত লাগাতে পারলে এই চুলকানি সমস্যা কমে যায়। তাছাড়া নিমপাতা রসে চুলের গোড়া শক্ত হয়,চুলের শুষ্কতা বা
রুক্ষ ভাব কমে যায় এবং নতুন চুল গজাতে শুরু করে।
# শুধুমাত্র চুলের নয় ত্বকের যে কোন ও চুলকানির সমস্যা নিমপাতা বেটে লাগাতে পারলে দ্রুত উপকার পাওয়া যায়।
# গায়ের দুর্গন্ধ বা ঘামের দুর্গন্ধ দূর করতে নিমপাতার রস খুবই কার্যকরী একটি উপাদান।
# নিয়ামিত সামান্য,পরিমাণে নিমপাতা খেতে পারলে কোষ্ঠকাঠিন্য সহ নানা লিভারের সমস্যা দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসে। এরই সঙ্গে রক্ত পরিশুদ্ধ করতে এবং শরীর থেকে বিষ্ণাক্ত,ক্ষতিকর উপাদান বের করে শরীর সুস্থ – সতেজ ও রোগযুক্ত রাখতে নিমপাতার রস খুবই কার্যকরী।

সংবাদটি শেয়ার করুন


এই বিভাগ থেকে পড়ুন