নয়ন দাস/কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় জেলার পৌর এলাকার কয়েকটি ওয়ার্ড ও বাজারে এক সপ্তাহের জন্য জনসমাগম ও অবাধ চলাচল নিয়ন্ত্রণে বিধিনিষেধ আরোপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আজ সোমবার বিকালে জেলা করোনা সংক্রান্ত কমিটির ভার্চুয়াল মিটিংয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান এবং জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান জানান, সাম্প্রতিক সময়ে কুড়িগ্রামে সংক্রমণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে জেলার সদর উপজেলাসহ সীমান্তবর্তী কয়েকটি উপজেলা লকডাউনের সুপারিশ করা হয়। আলোচনা, প্রস্তাব এবং সংক্রমণের মাত্রা বিবেচনায় আপাতত কুড়িগ্রাম পৌর এলাকার তিনটি ওয়ার্ডে জনসমাগম ও অবাধ চলাচল নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘জেলায় করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আমরা ম্যাপিংয়ের কাজ করেছি। জেলার কোন অঞ্চলগুলোতে সংক্রমণের মাত্রা বেশি, সেটি নির্ণয় করে আমরা আপাতত পৌর এলাকার ২, ৩ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডে জনসমাগম ও মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণে বিধিনিষেধ আরোপ করতে যাচ্ছি। আগামীকাল মঙ্গলবার বিকাল ৫টা থেকে পরবর্তী ৭ দিন এই বিধিনিষেধ চলবে। এরপরও সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ না হলে, আমরা কঠোর লকডাউনে চলে যাব।’
‘শহরের হাসপাতাল পাড়া এলাকায় ঔষধ ও খাবারের দোকান ছাড়া অন্যান্য দোকানপাট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও, জিয়া বাজার ও পৌর বাজার এলাকায় মোটরসাইকেল কিংবা অটোরিকশা ও রিকশা চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে। যাতে মানুষের সমাবেশ বা সমাগম কম হয়’, যোগ করেন তিনি।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, ‘কয়েকটি পয়েন্ট নির্ধারণ করা হয়েছে। ওই পয়েন্টগুলোতে মোবাইল কোর্ট ও পুলিশের মাধ্যমে ছোট ছোট পরিবহণে যাত্রী পরিবহন নিয়ন্ত্রণ করা হবে, যাতে তারা অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে পৌর এলাকায় প্রবেশ করতে না পারে।’
‘আমরা আপাতত আগামী সাত দিন পর্যবেক্ষণ করব। যদি এতে পরিস্থিতির উন্নতি না হয়, তাহলে পরবর্তীতে কঠোর বা সর্বাত্মক লকডাউনে যাব’, বলেন তিনি।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, আজ জেলায় ২৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১৯ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। করোনা শনাক্তের হার ৬৫ শতাংশ। যার মধ্যে ১৩ জনই সদর উপজেলার বাসিন্দা। ৫ জুন থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত গত ৯ দিনে জেলায় ২৩৯টি নমুনা পরীক্ষায় ১০৩ জনের দেহে করোনা সনাক্ত হয়েছে। গত ৯ দিনে করোনা আক্রান্ত ১০৩ জনের মধ্যে ৭৯ জনই সদর উপজেলার বাসিন্দা।