মামুন অর রশিদ বিজনঃ জীবনের প্রথম চাকরি মাগুরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি, যোগদান করা প্রায় দেড় বছর পার হয়ে গেছে। শুরু থেকে সকাল ৯ টায় অফিস প্রতিনিয়ত এই রুটিনের সাথেই অভ্যস্ত। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের লক্ষ্যে সারাদেশে সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে সকাল ৮টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। আমি ভেবেছিলাম হয়তো এটা আমাদের জন্য কার্যকর হবে না। কেননা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছিলো জরুরী পরিসেবা এই সময়ের বহির্ভূত থাকবে।
পরদিন বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড থেকে নোটিশ এলো আমাদেরও নতুন সূচি মেনে অফিস করতে হবে।মনে অস্থিরতা বিরাজ করছিলো। তবে সবমিলিয়ে অন্যরকম এক অনুভূতি বোধ করছিলামও বটে। কেননা ৯-৫টা অফিস করতে যেয়ে দিনের সবটুকু সময়ই চলে যেতো। বাড়তি কোনো কাজের সুযোগ হয়ে উঠতো না।
যাইহোক নতুন সময়সূচি নিয়ে আলোচনা হচ্ছিলো আর আমি ছিলাম মহা চিন্তায় কেননা ঘুম আমার বড় শত্রু! মঙ্গলবার বিকেল ৫ টায় অফিস শেষ করে বাসায় ফিরলাম। ফ্রেশ হয়ে হালকা নাস্তা তখন ঘড়ির কাটায় প্রায় ৭ টা। নিজের টুকিটাকি কাজগুলো গোছাতে গিয়ে বাজলো ৯ টা। রাতের খাবার নিয়ে বর্ষা হাজির ব্যস সময় শেষ। খাওয়াদাওয়া করে ঘুমানোর প্রস্তুতি মাথায় একটাই চিন্তা সকাল ৮ টায় অফিস!
দু’টো মোবাইলে এলার্ম দিয়ে রাখলাম তবুও অস্বস্তি বিরাজ করছে ঘুম থেকে কি জাগতে পারবো? সকাল না হতেই বর্ষা ডাকছে ওঠো অফিস যেতে হবে। আমি বললাম ৫ মিনিট এভাবে সময় পার করছি একপর্যায়ে বাড়িওয়ালা রেগে বললো পানি ঢেলে দিলাম! এই যে আমিও উঠে পড়েছি। তখন ঘড়ির কাটায় ৭ঃ৩০ বাজে। চোখ ডলতে ডলতে ফ্রেশ হলাম খাওয়াদাওয়া শেষ করে রওনা হলাম অফিসের দিকে। আমার বাসা থেকে অফিস বেশি দূরে না মাত্র ৫ মিনিটের পথ।
অফিসে পৌঁছাতে ১ মিনিট দেরিও হলো ঝটপট হাজিরা দিয়ে টেবিলে বসলাম। শুরুতে গ্রাহকের উপস্থিত ছিলো না বললেই চলে। ও হ্যাঁ আমি মাগুরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আড়পাড়া জোনাল অফিসে কর্মরত রয়েছি। সেখানে এক অবস্থানের সেবা অর্থাৎ গ্রাহক সেবা দেওয়া আমার বর্তমান কাজ। এভাবে বেলা গড়াতে শুরু করলো কাজের চাপও বাড়তে থাকলো তবে নতুন সময়সূচির প্রথম দিনের আবহাওয়াটা বেশ সুন্দর ছিলো হালকা বৃষ্টিও হচ্ছিলো।
অফিস বন্ধের ঠিক ঘন্টাখানেক আগে নতুন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হলাম। তখন গ্রাহকের আনাগোনা বেশি চোখে পড়ার মতো। বিদ্যুৎ বিলসহ নানা অভিযোগ নিয়ে হাজির কিন্তু ক্যাশ ক্লোজ রেজিস্ট্রার এন্ট্রিসহ নানা কাজে ব্যস্ত সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ। গ্রাহকগুলো গ্রামের অর্ধ শিক্ষিত মানুষ কোনো ভাবেই মানতে নারাজ। মুখের উপর নানা কথা ছুড়ে দিলো তাতে কি আমরাতো তাদের কর্মচারী। কথাগুলো হজম করে নিলাম। শেষমেশ সবকিছু গুছিয়ে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম ৩ঃ১৫ বাজে। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে অফিস থেকে বের হলাম তখনও আকাশে মেঘ হালকা বৃষ্টিও পড়ছে। এভাবেই চলবে পরের দিনগুলো…
সর্বোপরি সরকারের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানায় আশাকরি সকলে সরকারকে সহযোগিতা করবো পাশাপাশি সাশ্রয়ী হয়ে উঠবে শুধু সংকটে নয় সবসময়। এছাড়াও সরকারের কাছে অনুরোধ আমাদের অফিস বৃহস্পতিবার সম্পূর্ণ করে শনিবার সাপ্তাহিক বন্ধের ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য। বাংলাদেশ চিরজীবী হোক। সকলের মঙ্গল কামনা করছি।