বৈষম্য দূরীকরণসহ অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়নের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য সারাদেশের পবিসের ন্যায় কর্মবিরতি পালন করছে মাগুরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
আজ রোববার (৫ মে) সকাল ৯টা থেকে সমিতির সদর কার্যালয়ে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। তবে কর্মবিরতিতে গেলেও নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের লক্ষ্যে উপকেন্দ্রগুলোতে ১ জন করে কর্মী নিয়জিত রয়েছেন। বন্ধ রয়েছে গ্রাহক সেবাসহ অন্যান্য কার্যক্রম।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি) দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এসব সমিতির কর্মকর্তা ও কর্মচারী প্রতিনিয়ত নানা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। একই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করলেও পদ, পদবি, পদোন্নতি, বেতন গ্রেড, সাপ্তাহিক ছুটি, একই প্রতিষ্ঠানে একই পদে নিয়মিত এবং চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ, লোকবলের স্বল্পতাসহ সব ক্ষেত্রেই বৈষম্যের শিকার সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এসব বৈষম্যের বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ জানানো হলেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। বরং এসব ন্যায়সঙ্গত অধিকারের কথা বললেই নানাভানে হয়রানি করা হয়।
তারই ধারাবাহিকতায়, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি) ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) মধ্যকার বৈষম্য দূরীকরণসহ অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়নের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতিতে গেছেন সারাদেশের ৮০ টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রায় ৪০ হাজার কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
কর্মবিরতিতে অংশ নেওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলেন, বিদ্যমান বৈষম্যগুলো দূর করে বাপবিবো এবং পবিস একই সার্ভিস কোড পরিচালনা করা, ৫ শতাংশ প্রণোদনা জুলাই-২৩ থেকে কার্যকর, ২০১৫ সালের পে-জুলাই-১৫ থেকে সমধাপে কার্যকর, ৪০০ ইউনিট বিদ্যুৎ বিল ভাতা, দুই দিন সাপ্তাহিক ছুটি, নির্ধারিত কর্মঘণ্টা, অতিরিক্ত কাজের জন্য ওভারটাইম/ডিস্টারবেন্স অ্যালাউন্স, চিকিৎসা ভাতা, অডিটের নামে হয়রানি না করাসহ সরকার প্রদত্ত সকল সুযোগ-সুবিধা বিআরইবির ন্যায় সমিতির জন্যও বাস্তবায়ন চান তারা। এছাড়াও চুক্তিভিত্তিক প্রথা বাতিলকরণ এবং নিয়মিতকরণের জন্য আহবান জানান তারা।
এর আগে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের দৈত্ব নীতির কারণে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা হতে বঞ্চিত হচ্ছে দেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রায় ৪০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী। দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহের কাজে নিয়োজিত কর্মীরা একই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করলেও পদ-পদবি, বেতন-ভাতা, বোনাসসহ পদোন্নতির ক্ষেত্রে চরম বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছেন। সমিতির কর্মকর্তা কর্মচারীরা বিভিন্ন সময় গণস্বাক্ষর সংগ্রহ, বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে স্মারকলিপি প্রদানসহ নিয়মতান্ত্রিকভাবেই তাদের দাবি দাওয়া বাস্তবায়নে চেষ্টা করে আসছে। কিন্তু সমিতির নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় থাকা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি) তাদের দাবি না মেনে বরং উল্টো প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত ভোলা পবিসের দুইজন এজিএমকে সাময়িক বরখাস্ত, দুইজন এজিএমকে স্ট্যান্ড রিলিজ করে অন্য পিবিএসে বদলি এবং সিরাজগঞ্জ পবিস-২ এর ২ জন এজিএমকে বোর্ডে সংযুক্ত করে। এতে ৮০টি পবিসের প্রায় ৪০ হাজার কর্মকর্তা ও কর্মচারী চরমভাবে ক্ষুব্ধ হয়।