fbpx
সংবাদ শিরোনাম
সৌদি আরবের জেদ্দায় ফ্লাইট শুরু করতে যাচ্ছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স তীব্র তাপদাহেও গ্রীষ্মের সৌন্দর্য অমলিন ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের উপ-কর্মসূচি ও পরিকল্পনা সম্পাদক হলেন প্রিয়ন ফুলছড়িতে প্রার্থীর প্রচার-প্রচারণায় জমে উঠেছে নির্বাচনী আমেজ বৈষম্যের প্রতিবাদে সারাদেশের ন্যায় কর্মবিরতিতে মাগুরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ডুমুরিয়ায় নিসচা’র নতুন কমিটির পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ১০ প্রার্থীর মনোনয়ন দাখিল হযরত আয়েশা সিদ্দিকা রা. কওমী মাদ্রাসা উদ্বোধন টাইমস হায়ার এডুকেশন র‌্যাঙ্কিংয়ে দেশে তৃতীয় স্থানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় মণিরামপুরে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী থেকে সরে দাড়ালেন মিকাইল হোসেন

চা শ্রমিকের নায্য দাবি মেনে নেওয়া হোক 

                                           
প্রকাশ : মঙ্গলবার, ২৩ আগস্ট, ২০২২
চা শ্রমিকের নায্য দাবি মেনে নেওয়া হোক

মোহাম্মদ এনামুল হকঃ চা একটি বিশ্বের  জনপ্রিয় উপভোগ্য পানীয় দ্রব্য যা পান করে অনেকেই প্রশান্তি অনুভব করে। অনেক আগে থেকে চা শিল্পের গুরুত্ব ও প্রসার লাভ করেছে।

চীনেই প্রথম, ১৬৫০ খ্রিষ্টাব্দে  বাণিজ্যিকভাবে চায়ের উৎপাদন শুরু হয়। ভারতবর্ষে এর চাষ শুরু হয় ১৮১৮ খ্রিষ্টাব্দে। ১৮৫৫ খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটিশরা সিলেটে সর্বপ্রথম চায়ের গাছ খুঁজে পায়। এরপর ১৮৫৭ সালে সিলেটের মালনীছড়ায় শুরু হয় বাণিজ্যিক চা-চাষ।

এক সময় চা পাতা বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করতো বাংলাদেশ। কিন্তু দিন দিন চায়ের চাহিদা বৃদ্ধি,চাহিদার  তুলনায় উৎপাদন বৃদ্ধি না হওয়াই বর্তমানে আমাদের আমদানি করতে হয়। চা বোর্ডের তথ্যমতে, ২০২১ সালে দেশে ৯৬ দশমিক ৫০৬ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদনের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়।তা সত্ত্বেও, ২০২১ সালে দেশে চা আমদানি হয়েছে ৬ লাখ ২৫ হাজার কেজি। চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে আমদানি হ্রাস করার পাশাপাশি রপ্তানি করার সুযোগ রয়েছে। চা-বাগান সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শ্রমিকদের কঠোর পরিশ্রমে চা উৎপাদনে বাংলাদেশ নবমস্থানে ওঠে এসেছে।

বাংলার চা শিল্পের ১৬৭ বছরের ইতিহাসে চা শ্রমিকের বেতন ১৬৭ টাকা হয়নি। সম্প্রতি চা শ্রমিকরা বর্তমান বাজার দাম ব্যবস্থার আলোকে তাদের নায্য মজুরি দাবি করার জন্য দাবি তুলে।তাদের দাবির পিছনে অবশ্যই যৌক্তিক কারণ আছে।

বর্তমানে সবকিছুর দাম হু হু করে বেড়েই চলছে।নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম এখন যে পর্যায়ে রয়েছে ৪/৫ জন সদস্যের পরিবারের দৈনিক ১০০০ টাকা হলেও সব কিছু ঠিকঠাক পূরণ করা অনেক কষ্ট হয়ে যাচ্ছে।চাল, ডাল,পিঁয়াজ,কাচা মরিচ, ডিম সব কিছুর দাম উর্ধ্বেগতিতে। দেশের বাজেট বেড়েছে, অন্যান্য পেশাজীবীদের বেতন বেড়েছে সাধারণ শ্রমিকের জীবনযাত্রার মান বেড়েছে, দামও বেড়েছে তাদের। তা সত্ত্বেও তাদের পর্যন্ত জীবন চালাতে হিমশিম খাচ্ছে। সেখানে চা শ্রমিকরা কেন অবহেলার স্বীকার হবে? তাদেরই বা মজুরি কেন বাড়ানো হবে না?  ২ কেজি চালের দামও ১২০টাকা লাগে। সেখানে চা শ্রমিকের দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা। ১২০ টাকা দিয়ে সংসার কিভাবে চালাবে? এই যুগে ১২০টাকার মজুরি দিয়ে কি হয়?

চা শিল্প বাংলাদেশের অন্যতম একটি সম্ভবনাময় ও ঐতিহ্যবাহী শিল্প। এই শিল্পের প্রাণ হচ্ছে চা শ্রমিকরা। শ্রমিকদের যথাযথ সম্মান ও সুযোগ – সুবিধা প্রদান না করে কোন শিল্পই এগিয়ে যেতে পারে না। যেখানে সব কিছুর বাজার দাম বেশি সেখানে ১২০টাকা দিয়ে কাজ করে  পরিবার চালোনা কত কঠিন বিষয় সেটা সহজেই অনুমান যোগ্য। প্রতি দুই বছর পর পর নতুন চুক্তি হলেও ২০২১ সালের জানুয়ারিতে আবার নতুন চুক্তি হওয়ার কথা সেখানে চা শ্রমিকদের দাবি হচ্ছে ৩০০ টাকা দৈনিক মজুরি নির্ধারণ করতে হবে । বর্তমান প্রেক্ষাপট চিন্তা করলে ৩০০ টাকা আহামরি কিছু না।মালিক পক্ষের এক বৈঠকে আগের বেতন থেকে মাত্র ১৪ টাকা বাড়িয়ে ১৩৪ টাকা নির্ধারণ করেছিল,পরবর্তীতে ১৪৫ টাকা করে। যা এই সময়ে একবারেই অযৌক্তিক ও অমানবিক বেতন কাঠামো।

চা-বোর্ডের তথ্য অনুসারে দেশের ১৬৭ চা-বাগানে ৫ লাখের বেশি চা-শ্রমিকের মধ্যে স্থায়ী শ্রমিক প্রায় এক লাখ। একজন শ্রমিকের মজুরির ওপর কমপক্ষে ৫ জনের ভরণপোষণ নির্ভর করে। বর্তমান দ্রব্যমূল্যের বাজারে ৩০০ টাকা মজুরি পেলেও তা সম্ভব না। শ্রমিকদের কথা চিন্তা করে ও চা শিল্পের অগ্রগতির নিমিত্তে এই সংকটের যথাযথ সমাধান জরুরি। শ্রম অধিদপ্তর, চা বোর্ড মালিক সমিতি ও শ্রমিকদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে এই সমাধান আসতে পারে। শ্রমিকদের নায্য দাবি যাতে অবহেলিত না হয় সরকারের সুদৃষ্টি প্রয়োজন। শ্রমিক ও মালিকের দ্বন্দ্বে চা শিল্পের সম্ভবনার ব্যাঘাত ঘটবে। তা  দেশের জন্য অমঙ্গল বৈ মঙ্গল বয়ে আনবে না। তাই উক্ত সমস্যার আশু সমাধান কামনা করি৷

লেখক- শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও সদস্য, তরুণ কলাম লেখক ফোরাম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।

সংবাদটি শেয়ার করুন


এই বিভাগ থেকে পড়ুন