fbpx

হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী বিনাদন বায়োস্কোপ

                                           
মোসফিকা আক্তার
প্রকাশ : বৃহস্পতিবার, ১ জুলাই, ২০২১
হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী বিনাদন বায়োস্কোপ

এক সময়কার গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী বিনোদন ছিল বায়োস্কোপ দেখা।এখন আর আগের মত চোখে পড়ে না। কালের বিবর্তনে অনেক কিছু বদলে যাচ্ছে হারিয়ে যাচ্ছে স্বপ্ন। সেখানে স্থান করে নিচ্ছে প্রযুক্তির কৃত্রিমতা। তেমনি হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার চিরচেনা ঐতিহ্য বায়োস্কোপ। যা এক সময় ছিল গ্রাম বাংলার শিশুদের চিত্ত বিনোদনের মাধ্যম।

কিন্তু ভেঁপু বাঁশি বাজিয়ে সবাইকে আহবান জানিয়ে দুলদুল মোড়া, মক্কা – মদিনা, আজমির শরীফ ও শুদিয়ামের ফাঁসির বায়োস্কোপ দেখিয়ে আজ ও শিশু কিশোর – বৃদ্ধ সব বয়সের মানুষকে সমান তালে আনন্দ দিতেন।বিভিন্ন অঞ্চলে মেলা,পূজা – পার্বণে বায়োস্কোপ প্রদর্শনী হয়ে থাকে। বায়োস্কোপে সর্বোচ্চ ৬ জন একটি প্রদর্শনী উপভোগ করতে পারেন। রিল হিসেবে টিকেট মূল্য নির্ধারিত হয়।

প্রদর্শনীর সময়সীমা অনুযায়ী টিকিট মূল্য কম বেশি ও হয়ে থাকে। আবার শহর অঞ্চলে গ্রামাঞ্চল ভেদে প্রদর্শনী মূল্যের তারতম্য আছে। বায়না শো তথ্য শহরাঞ্চলে শো প্রতি ৬০ টাকা নির্ধারিত হয়ে থাকে। তার ভাষ্য মতে, মেলাকেন্দ্রিক এই পরিবেশনার সাধারণত দুপুর থেকে সন্ধ্যা পযর্ন্ত ভিড় থাকে বেশি। ভিড়ের ওপর নির্ভর করে রিল টানার গতি। বায়োস্কোপ আমাদের দেশির সংস্কৃতি একটি ঐতিহ্য বহন করে।

তবে আজ এর অবস্থা একেবারেই সংকটাপন্ন। বিশেষ করে স্যাটেলাইটের যুগে টিভি, মোবাইল, সিডি ও ভিসিডির সহজলভ্যতার কারণেই এর প্রচলন কমে গেছে। তাবে বায়োস্কোপ নানা রং ঢংয়ের মাধ্যমে বর্ণনা দিয়ে একটি কষ্টসাধ্য কাজ।কী চমৎকার দেখা গেল এইবারেতে আইসা গেল,শহর দেখেনে ভালো। কী চমৎকার দেখা গেল।এ সুর আর ছন্দের তালে তালে ধারা বিবরণী বায়োস্কোপ ওয়ালর।বায়োস্কোপ বাংলার হারিয়ে যাওয়া এক ঐতিহ্যের নাম। কাঠের বাক্স চোখ লাগিয়ে গানের তালে ছবি দেখার দৃশ্য নগরজীবনে আর চোখেই পড়ে না।

খঞ্জানি আর গানের তালের বাক্সের ভেতর পাল্টে যায় ছবি। আর তা দেখে যেন গল্পের জগতে হারিয়ে যায় ছেলে বুড়ো সবাই। বর্তমানে সময়ে গ্রাম বাংলার বায়োস্কোপ এখনই বিরল যে,জাদুঘরে রেগে দেয়ার জন্য ও অন্তত একটি বায়োস্কোপ কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না।মেলার এলে দেখতে পাবেন হারিয়ে যাওয়া প্রদর্শন।বায়োস্কোপের সঙ্গে বাঙালিকে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কিছু নেই। বিশেষ করে গ্রাম বাংলার জনপদে বেড়ে ওঠা মানুষকে তো বটেই। তবে যারা শহরের চার দেয়ালের মধ্যে বন্দি জীবনযাপন করে অভ্যস্ত কিংবা যাদের জন্ম একযুগ আগে তাদের কাছে হয়তো হাস্যকর এক ফেকা বাক্স মনে হবে।

ডিজিটাল মার্কেটিং ও ই-ফ্রিল্যান্সিং কি? জানতে ক্লিক করুন

কিন্তু বায়োস্কোপ মোটেও হাস্যকর কেনো বস্তু ছিল না,কিংবা ছিল না কোনো ফেকা বাক্সও।প্রকৃতপক্ষে বায়োস্কোপ গ্রাম বাংলার সিনেমা হল। রংয়ের ঙের কাপড় পরে,হাতে ঝুনঝুনি বাজিয়ে বিভিন্ন রকমের আলোচিত ধারা বর্ণনা করতে করতে ছুটে চলত গ্রামের স্কুল কিংবা সরু রাস্তা ধরে হ্যামিলনের বাঁশিওয়ার মতো তার পেছনে পেছনে বিভোব স্বপ্ন নিয়ে দৌড়াত গ্রামের ছেলে মেয়েরা। বায়োস্কোপওয়ালার এমন ছন্দময় ধারা বর্ণনায় আকর্ষিত হয়ে ঘর ছেড়ে গ্রামের নারী পুরুষ ছুটে আসত বায়োস্কোের কাছে।

একসঙ্গে সবাই ভিড় জমালে ও তিন কি চার জনের বেশি একসঙ্গে দেখতে না পারায় অপেক্ষা করতে হতো।সিনেমা হলের মতো এক শো এরপর আবার আর তিন বা চারজন নিয়ে শুরু হতো বায়োস্কোপ। বায়োস্কোপ দেখান শুরু করলেই কি চমৎকার দেখা গেল ‘বলে ফের শুরু হতো বায়োস্কোপওয়ালার ধারা বিবরনী।আর এ বায়োস্কোপ দেখানোর বিনিময়ে দু’ মুঠো চাল কিংবা ২ টাকা নিয়েই মহাখুশি হয়ে ফিরে যেত বায়োস্কোপওয়ালা। কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেছে বাংলার বিনোদনের এ লোকজ মাধ্যমটি। টিভি আর আকাশ সংস্কৃতি স্যাটেলাইট ও স্মার্ট মোবাইলের সহজলভ্যতর কারণে আপনা- আপনিই উঠে গেছে বায়োস্কোপ।

তবওু আপনিই উঠে গেছে বায়োস্কোপ। তবুও কোথাও না কোথাও একজন থাকে। একটা সময় ছিল যখন গ্রাম গঞ্জের পথে ঘাটে হাটবাজরে অর্থ উপার্জন করতো ধান চাল ও অর্থের বিনিময়ে বায়োস্কোপ প্র‍দর্শন করতেন। বাংলার প্রায় হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য, সংস্কৃতিকে নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচয় মেলার আয়োজন করে হয়।বায়েস্কোপ দেশীয় সংস্কৃতির একটি ঐতিহ্য বহন করে।

সংবাদটি শেয়ার করুন


এই বিভাগ থেকে পড়ুন