সারা বাংলা

হত্যা নাকি আত্মহত্যা- গাংনীতে গৃহবধূর মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াসা

  দেশান্তর প্রতিবেদন ৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ৭:০৬:১৫

হত্যা নাকি আত্মহত্যা- গাংনীতে গৃহবধূর মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াসা

প্রেমের সম্পর্ক থেকে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন ঊর্মি- প্রিন্স দম্পতি। চার বছরের সংসারে রয়েছে একটি পুত্র সন্তান। এক রাতেই সবকিছু এলোমেলো, ১৩ মাসের পুত্র সন্তান রেখে মায়ের আত্মহত্যা! এদিকে আত্মহত্যার মিথ্যা নাটক সাজানোর অভিযোগ নিহতের পরিবারের। তাহলে কি কারণে মৃত্যু হলো ঊর্মির, হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে পরিবারসহ সহপাঠীদের মাঝে।

মেহেরপুরের গাংনী পৌর শহরের কাথুলী মোড় এলাকায় থেকে নিশাত তাসনীম ঊর্নি (২৪) নামের এক গৃহবধূর মরাদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহষ্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) মধ্য রাতে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে গাংনী থানা পুলিশের একটি টীম মরাদেহ উদ্ধার করে। নিহত নিশাত তাসনীম ঊর্মি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

ঊর্মির পিতা গোলাম কিবরিয়া জানান, আমার মেয়েকে তার স্বামী প্রিন্স শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। হত্যার পর উর্মি আত্মহত্যা করেছে বলে ঘটনা ধামা চাপা দেয়ার চেষ্টা করছে।

তিনি আরো বলেন, ঊর্মি অসুস্থ হওয়ায় তাকে গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়েছে। অসুস্থতার কারন জানতে চাইলে ঊর্মি ঘরের জানালার সাথে ফাঁস দিয়েছে বলে জানানো হয়। সংবাদ পেয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে জানতে পারি ঊর্মি অনেক আগেই মারা গেছে। ঊর্মির শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

ক্যাম্পাসের সহপাঠী সূত্রে জানা যায়, ঊর্মি অত্যন্ত নম্র ভদ্র মেয়ে ছিলো। হাসিখুশি থাকা মেয়েটির অকাল মৃত্যু অপ্রত্যাশিত এছাড়াও সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচারের দাবী জানান তারা।

এছাড়াও সুষ্ঠু তদন্তের দাবী জানিয়েছে চিৎলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীবৃন্দ।

“সবায় কিন্তু গলায় দড়ি দিয়েই আত্মহত্যা করে না। আত্মহত্যা করার উপায় সবার আলাদা। কেউ পছন্দের খাবার খাওয়া ছেড়ে দেয়, কেউ তার খুব পছন্দের মানুষকে ছেড়ে দেয়, কেউ বিশ্বাস করা ছেড়ে দেয়, কেউ গান গাওয়া ছেড়ে দেয়, কেউ ছবি তোলা, কেউ ছবি আঁকা, কেউ লেখা, কেউ সপ্ন দেখা, কেউ ভালোবাসা, কেউ ভালোবাসা স্বীকার করা ছেড়ে দেয়।”-ঊর্মির ফেসবুক পোস্ট থেকে নেওয়া-

নিহত ঊর্মির শশুর শফিউল ইসলাম হাশেম মুঠোফোনে দৈনিক দেশান্তরকে জানান, আমার ছেলে নাতি ও বউমা ঘুমাচ্ছিলো। হঠাৎ নাতীর কান্নার শব্দে ঘুম থেকে উঠে আমার ছেলে প্রিন্স বউমাকে খুজে পাচ্ছিলোনা তারপর রুমে লাইট চালু করে এবং চিৎকার করে পরে আমি যেয়ে দেখি বউমা জানালার গ্রিলের সাথে ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করে চেষ্টা করে। আনুমানিক রাত ১১ টার দিকে তাৎক্ষণিক হাসপাতালে নিয়ে যায়।

হত্যার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এধরনের কোনো আচরণ আমার চোখে পড়েনি। মানুষ বলতেই পারে তবে ময়না তদন্তের রিপোর্ট এলে বোঝা যাবে। রিপোর্টে যদি হত্যার রায় আসে তাহলে আমার ছেলে দোষী হবে এবং বিচার হবে বলে জানান।

গাংনী থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক জানান,উর্মির শরীরের আঘাতের আলামত রয়েছে। ময়না তদন্তের জন্য মরাদেহ পাঠানোর প্রস্তুতি সম্পূর্ণ। তদন্তের রিপোর্ট পেলে কিভাবে মৃত্যু হয়েছে তা সঠিক ভাবে বলা সম্ভব হবে। তিনি আরো বলেন, নিহতের পরিবার থেকে মালমা করা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরও খবর 1

Sponsered content