fbpx

নড়াইলের পল্লীতে হিন্দু সম্প্রদায়ের গরু বিক্রয়ের টাকা হাতিয়ে নিল গরু দালালরা!!

                                           
উজ্জ্বল রায়
প্রকাশ : সোমবার, ৭ জুন, ২০২১

নড়াইল জেলা প্রতিনিধি:

নড়াইলে হিন্দু সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের গরু বিক্রয়ের টাকা হাতিয়ে নিল গরু দালাল প্রতারক চক্র।

সদর উপজেলার দেবভোগ গ্রামের সংখ্যালঘু প্রান্তিক কৃষক তুষার সিকদার কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, তিনি আর করবেন না গরু পালন।

কৃষক তুষার সিকদার বুক ভরা আশা নিয়ে দুই বছর ধরে ২টি গরু পালন করেন । খুব আদর-যতেœ গরু দুটি কে মোটাতাজা করেন। কৃষক তুষারের স্বপ্ন ছিলো গরু বিক্রি করে মেয়ের বিয়ের সময় বন্ধক রাখা শেষ সম্বল এক খন্ড চাষাবাদের জমি মহাজনের কাছ থেকে ছাড়িয়ে নিবেন । তুষারের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেল ।

কেন গরু পালন করবে না জানতে চাইলে গরু মালিক তুষার সিকদার কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, বাবা আমার মাথায় বাড়ি হয়ে গেছে। গত ০৯/০৫/২০২১ তারিখ রবিবার বাহির গ্রামের গরুর দালাল সার্জেন ও হাফিজ নড়াইলের গরু

ব্যাপারী মিন্টু কসাইয়ের ছেলে সোহান কে নিয়ে আমার বাড়ি এসে বলে, কাকা তোমার গরু বিক্রি করবে নাকি ?

আমি বললাম হ্যা, আমার বন্ধক জমি ছাড়াতে টাকা লাগবে, দামে পটলে বিক্রি করবো। সার্জেন বললো, গরু দুটি কত হলে ব্যাচবা ? আমি বললাম ১,৬০,০০০ হাজার টাকা হলে বেচবো। সার্জেন বললো, ১,৪০,০০০ হাজার টাকায় দেবে , অমি ভেবে দেখলাম টাকার দরকার তাই রাজি হয়ে গেলাম। গোয়াল থেকে গরু দুটো কে বের করে দিলাম ওরা আমাকে ৪০,০০০ হাজার টাকা হাতে দিয়ে বললো, বাহিরগ্রাম বাজারে আসো, গাড়িতে গরু উঠাবো ওখান থেকে বাকি টাকা দিয়ে দিবো ।

আমি বললাম ঠিকআছে, আমি বাজারে আসছি বাজারে যেয়ে দেখি আমার গরু নিয়ে গাড়ি ছেড়ে দেছে , আমি বললাম আমার টাকা না দিয়ে কিভাবে গাড়ি ছেড়ে দিলে, সার্জেন আমাকে বললো, গাড়ি যেতে দেও অমি টাকা দিচ্ছি, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বসিয়ে রাখার পর আমাকে বলে নড়াইল থেকে ব্যাপারী টাকা নিয়ে মটর সাইকেলে রওনা দিছে, আসলে দিচ্ছি, বিকাল হয়ে গেল ব্যাপারী টাকা নিয়ে আর আসেনা এর পর আমাকে সার্জেন বললো ,কাকা তুমি বাড়ি যাও আমি গরুর হাটে যেয়ে টাকা নিয়ে এসে তোমার বাড়িতে পৌছে দিয়ে আসবানি, আমিতো হারিয়ে যাচ্ছি না। আমি রাত্র বারটা পর্যন্ত বাজারে বসে থেকে বাড়ি চলে আসলাম বাড়িএসে সার্জেন কে ফোন দিলে সে আমার ফোন ধরেনা।

টাকাও দেয় না, আমি কোন উপায় না পেয়ে কড়লা ইউনিয়নের বিট অফিসার এস আই আতাউর স্যার কে বিষয় টি মৌখিক ভাবে জানাই। তিনি আমাকে আস্বস্ত করে বলেন, বিষয় টি আমি দেখছি, কয়েক দিন আতাউর

স্যারের পিছনে ঘোরার পর তিনি আমাকে বলেন, তোমার কোন সাক্ষী প্রমান নেই তাই আমি এবিষয় কিছু করতে পারবো না। এখন আমার গলায় দড়ি দেওয়া ছাড়া কোন উপায় নেই।

দেবভোগ গ্রামের নিলকন্ঠ সিকদার নামে এক জন বলেন, এই দালাল চক্র এলাকার নিরিহ হিন্দুদের বাড়ি গিয়ে গরু কেনার নামে চিটারি করে আসছে । এরা একটা সংঘবদ্ধ চক্র। এ ব্যবসা এরা আগেও করেছে। শুনেছি, । এ ব্যাপারে গরুর দালাল সার্জেন এর কাছে জানতে চাইলে তিনি কোন কথা বলতে রাজি হন নাই। এক পর্যায়ে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, যা দেয়ার দিছি আর দিতে পারবো না, পারলে আদায় করে নিক।

এব্যাপারে এস আই আতাউর এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গরুর মালিক যে টাকা পাবে তার কোন সাক্ষ্য প্রমান না থাকায় আমি কিছু করতে পারি নাই তবে সে দুটি গরু বিক্রি করেছে এটা সত্য, আর আমি কারো কাছ থেকে কোন টাকা নেই নি।

সংবাদটি শেয়ার করুন


এই বিভাগ থেকে পড়ুন