শিশু- কিশোররা সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের শিকার। ভারতীয় স্যাটেলাইন সংস্কৃতির একতরফা প্রবাহ বাংলাদেশি বউ- ঝিদের মানসিকতা বিকারগ্রস্ত করে চলেছে। গঠনমূলক পরিকল্পনার অভাবে বাংলাদেশী সংস্কৃতি এর স্বকীয়তা হারাচ্ছে। রক জ্যাজ,ডেথ মেটাল আর ব্যান্ডেয় শব্দে শহুরে কসমোপলিটান সংস্কৃতিতে
এখন জারি,সারি,ভাটিয়ালি,
ভাওয়াইয়া, ঘেঁটু গম্ভীরা, যাত্রা ও পালা গানের সুর কমই শোনা যায়।
চারদিকে পরিবর্তনের হারিয়ে যাওয়ার উৎসব।সব নেতিবাচক নয়।স্বতস্ফুর্ত পরিবর্তন গ্রহণীয়।তবে অন্যের প্রভাবে নিজের সত্তা হারানো আন্তঘাতী এবং অস্তিত্ব বিনাশকারী।জলবায়ুর পরিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে কোলা ব্যাঙ, পাখি,নদী,পোকা, গাছ,মাছ আর ও অনেক কিছু।সাহিত্য থেকে প্রতিবাদ রাজনীতি থেকে জনকল্যাণ,নির্বাচন থেকে ভোট, আর ভোট থেকে ইভিত্রমের কারিশমায় ব্যাল্ট পেপার ও ব্যালটবাক্স হারিয়ে যাচ্ছে।
এভাবে সমাজ,রাজনীতি,সাহিত্য সংগীত থেকে প্রতিনিয়ত অনেক কিছু হারাচ্ছে।হারাচ্ছে বাদ্য ও খাদ্য থেকে ও বিস্তার। তরুণ প্রজন্মের সঙ্গে বার্গার,রোল, স্যান্ডউইচ আর পিজ্জার ঘনিষ্ঠতায় পায়েশ,পিঠা আর বাতাসার দেখা মেলে কদাচিং।তরুণ প্রজন্ম কি জানে শীতের সকালে খেজুরের রসে ভেজানো চিতই পিঠার স্বাদ ফাস্টফুড়ের চাপে এরা পিঠা চেনে না।শীতকালে রাজধানীসহ বড় শহরগুলোর পিঠা উৎসব করে পিঠার সঙ্গে এদের পরিচয় করাতে হয়। পিঠা পায়েস আর গুড় কমে যাওয়ার প্রধান কারণ হল খেজুরের গাছ কমে যাওয়া তবে বাজারে অনেক খেজুরের গুড়।এগুলোর মধ্যে ভেজাল বেশি। ফ্লেভার দিয়ে তৈরি করা। খেজুরের গাছ বেশি হয় দেশের দক্ষিণাঞ্চলে। অপরিকল্পিত উন্নয়নের জোয়ারে অনেক জমিতে খেজুরের গাছ কেটে তৈরী করা হয়েছে ইটের ভাটা সেখানে ইট পোড়ানো হয় তবে যেসব খেজুরের গাছ এখানো আছে সেগুলো কাটার জন্য গাছি পাওয়া যায় না।
সবাই তো আর এ গাছ কাটতে পারেন না।এর জন্য পেশাদারিত্ব প্রয়োজন।গাছের বুক কেটে সেখান থেকে সুমিষ্ট রস বের করা এক ভিন্ন শিল্প। যাদের দায়ের শিল্পিত ছোঁয়ার বোবা খেজুর গাছ আমাদের দেয় নিজের বুকের সুমিষ্ট রস।বাঁচিয়ে রাখে বাঙালির পিঠে- পায়েশের সংস্কৃতি। সময়ের পরিবর্তন সাথে সাথে হারিয়ে যেতে বসেছে আমাদের আগেকার সময়ের পুরাতন সংস্কৃতি। আমাদের গ্রামবাংলার প্রতিটি বাড়িতে বাড়িতে ছিল আমোদ – প্রমোদের কতই না আয়োজন। যা দেখে শুনে সে সময়ের মানুষেরা আনন্দ, উল্লাসে ও হেঁসেখেলে বেড়াতো,এখন আর আমাদের বাংলা সচরাচর দেখা যায় না।আমাদের গ্রাম বাংলা যে সংস্কৃতি তা আবহমান কাল থেকে পরস্পর চলে আসছে। সবাই ব্যস্ত যে যার মতো।সময় অতি দ্রুত চলে যায়। জীবনের স্বাদ অপূর্ণ রয়ে যায়। হিংসা প্রতিহিংসায় চলছে দিনাতিপাত।আবহমান কালের সংস্কৃতি একন কেউ ধারনা করে না, বহন করে না যুগ যুগ ধরে চলে আসা কত রীতি।