করোনা পরিস্থিতির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী, ছাত্রছাত্রীদের অনুদান দিচ্ছে সরকার। এ জন্য অনলাইনে আবেদনও নেওয়া হচ্ছে। আজ (০৭ মার্চ) আবেদনের শেষ দিন। তবে এই সময় বাড়ানো হতে পারে।
তবে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী, ছাত্রছাত্রীদের অনুদান দেওয়া হবে এমন কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি। আবেদন যাচাই-বাছাই করে সীমিতসংখ্যক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে অনুদান দেওয়া হবে।
কিন্তু অনুদানের এই ঘোষণা ইতিমধ্যে দেশজুড়ে গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। ১০ হাজার টাকা করে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে অনুদান দেওয়ার গুজব ছড়িয়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারকরা।
এ জন্য সতর্কতামূলক বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। রোববার (৭ মার্চ) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবুল খায়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, আবেদন যাচাই-বাছাই করে সীমিতসংখ্যক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে অনুদান দেওয়া হবে। এই বিষয়ে কোনো ধরনের গুজবে কান না দেওয়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী ও ছাত্রছাত্রীদের অনুদান প্রদানের সংশোধিত নীতিমালা ২০২০ অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী, ছাত্রছাত্রীদের অনলাইনে (www.shed.gov.bd) আবেদন আহ্বান করা হয়েছে। আজকে (৭ মার্চ) আবেদনের শেষ দিন। তবে কর্তৃপক্ষ আবেদনের সময় বাড়ানোর বিষয়ে চিন্তা করছে।
এদিকে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়ার গুজবে সারাদেশে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা ভিড় করছেন। শনিবার দেশের বিভিন্ন এলাকায় এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
জানা গেছে, বিভিন্ন প্রতারকচক্র অনলাইনে আবেদনের জন্য গুগল ডকে ফর্ম ফিলাপ করতে বলছে। সেখানে ব্যক্তিগত তথ্যসহ বিকাশ ও অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নম্বর ও পিনসহ গোপন তথ্য চাচ্ছে, যা সম্পূর্ণ প্রতারণা।
এ ধরনের প্রতারণায় বিভ্রান্ত না হতে গত বৃহস্পতিবার একটি বিবৃতি দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. ফজলুর রহমান স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি সতর্কতামূলক বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলা হয়, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে সরকারের দেওয়া বিশেষ অনুদান প্রদানের নামে অনলাইনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের কাছে অসৎ উদ্দেশ্যে প্রতারকচক্র ভিন্ন ভিন্ন মোবাইল ফোন থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র, বিকাশ নম্বর ও গোপন পিন ইত্যাদি চাচ্ছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিচয় দিয়ে ফোনগুলো করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী ও ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিশেষ অনুদান বিষয়ে কাউকে ফোন দেওয়া হয়নি এবং জাতীয় পরিচয়পত্র, বিকাশ নম্বর ও গোপন পিন সংক্রান্ত কোনো তথ্যও চাওয়া হয়নি। এ বিষয়ে প্রতারক চক্র থেকে সতর্ক থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) আওতাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী ও ছাত্রছাত্রীদের অনুদান প্রদানের গত ১৮ ফেব্রুয়ারি একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। ওই বিজ্ঞপ্তিতে টাকার পরিমাণ উল্লেখ করা হয়নি। এ ছাড়া সংশোধীত নীতিমালা অনুযায়ী সবাই আবেদনের যোগ্যও না।
কিন্তু সবাইকে অনুদান দেওয়া হবে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়ানো হয়। গুজবের ফলে গতকাল শনিবার দেশের বিভিন্ন এলাকায় শিক্ষার্থী অভিভাবকদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভিড় করতে দেখা যায়।
সূত্রঃ সময় টিভি