শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে, ভিসি অপসারণের দাবিতে রাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন রাবি শিক্ষক নেটওয়ার্ক। সেই সাথে শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি সরকারকে দ্রুত মেনে নেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারী) বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলক চত্বরে এ অবস্থান কর্মসূচিটি পালিত হয়।
এসময় শাবিপ্রবি ভিসির আচরণের তীব্র নিন্দা প্রকাশ করে তাকে অবিলম্বে পদত্যাগ করে উদ্ভুত পরিস্থিতি সমাধান করতে দাবি জানান তারা। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির সাথে তারা সর্বদা সাথে আছেন এমনটি জানান।
অবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, শাবি উপাচার্যের পদত্যাগই এই আন্দোলন থামানোর একটা নির্বিকল্প পথ হয়ে আছে। এছাড়া এই আন্দোলন থামানো যাবে না। এটা এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও সরকারের বিরুদ্ধে চলে গেছে। এটা সরকারের ও প্রশাসনের ব্যর্থতা। শিক্ষার্থীদের অনশন ১৪০ ঘন্টা পার হলেও শিক্ষার্থীদের খোঁজ না নিয়ে তৃতীয় পক্ষকে খোঁজা হচ্ছে, কে ইন্ধন দিচ্ছে, কোথা থেকে টাকা আসছে সেটার একটা ফানি গেইম খোজার চেষ্টা করছে সরকার। কেন হামলা হল শাবিপ্রবিতে? তারা স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে কথা বলেছে সেজন্য! একজন শিক্ষার্থীর যদি কিছু হয় তাহলে ছাত্র আন্দোলন কি হতে পারে বুঝতে পারছেন না। পঁচা শামুকে পা কাটবেন না। শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিন, পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে করবেন না।
একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী মামুন হায়দার বলেন, ছাত্র আন্দোলন গত ১০-২০ বছর দেখিনি। শাবিপ্রবিতে তারা প্রশাসনের সাথে সমঝোতা করতে চেয়েছিল। শিক্ষার্থীরা ১৪০ ঘন্টার বেশি সময় অনশন করছে কিন্তু সেদিকে নজর নেই সরকারের। আমরা শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি আদায়ের আন্দোলনে রয়েছি। আমাদের কর্মসূচি চলবে। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী এবং একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যকারী ব্যক্তি উপাচার্য থাকার নৈতিক যোগ্যতা হারিয়েছেন। তার পদত্যাগ চাই।
বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সৌভিক রেজা বলেন, গণতন্ত্র চর্চার জায়গা, অধ্যাদেশে ভিসি নির্বাচনের কথা বলা আছে। কিন্তু গত ত্রিশ বছর ধরে এই অধ্যাদেশ মতো নিয়োগ চলে না। অনির্বাচিত ভিসি ও প্রশাসকের কাজ থাকে গ্ৰুপ তৈরি করা। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভিসি নির্বাচন চাই। শাবির ঘটনা এক দিনের বিস্ফোরণ নয়। ফুঁসে থাকা দীর্ঘদিনের ক্ষোভের বিস্ফোরণ। তাই গণতান্ত্রিক ভিসি প্রয়োজন।
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, ‘নৈতিক দায়িত্ব থেকে এখানে এসেছি। হলের প্রাধক্ষের সাথে শিক্ষার্থীদের অসন্তোষ ছিল। আন্দোলনের সময় ছাত্রলীগ ও উপাচার্যের ইন্দনে পুলিশ তাদের পেটাল। সরকার আন্দোলনে তৃতীয় পক্ষ খুঁজছে। তাহলে তৃতীয় পক্ষ কি পুলিশ, ছাত্রলীগ? তারা ছাত্রদের উপর আঘাত না করলে এমন পরিস্থিতি তৈরি হতো না। এখানে ষড়যন্ত্রের গন্ধ না খুঁজে শিক্ষার্থীদের বাঁচান। তারা জীবন বাজি রেখে অনশন করছে।
এছাড়াও অবস্থান কর্মসূচিতে রাকসু আন্দোলন মঞ্চের আহ্বায়ক আবদুল মজিদ অন্তর, শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি শাকিলা খাতুন, ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মহব্বত হোসেন মিলনসহ অন্যান্য বাম ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীরা ও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরাও অংশ নেন।