নিজস্ব প্রতিবেদকঃ যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালযের (যবিপ্রবি) কর্মচারী সমিতির ২০১৯-২০ সেশনের সদ্য সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে সমিতির অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। যবিপ্রবি কর্মচারী সমিতি দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার পর গত ৩ নভেম্বর ২০২০ খ্রি. নতুন কমিটি অর্থের হিসাব বুঝে নিতে গিয়ে হিসাবে অসামঞ্জস্যতা পাওয়ার পর পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দাখিলের পর অর্থ আত্মসাতের প্রমান মিলেছে।
নিরাপত্তা সুপারভাইজার হাফিজুর রহমানকে আহবায়ক করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্যান্যরা হলেন- সদস্য অফিস সহকারী ও কাম কম্পিউটার অপারেটর মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ফকির, তুহিন হাসান, ল্যাব টেকনিশিয়ান আবু হানিফ ও সদস্য সচিব অফিস সহায়ক অসীম কুমার রায়।
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের পর কর্মচারী সমিতির সাবেক সভাপতি এস এম সাজেদুর রহমান জুয়েল ও সাধারণ সম্পাদক কে এম আরিফুজ্জামান সোহাগের নিকট ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দেয়। চিঠিতে জানানো হয়, সমিতির নতুন সদস্যপদের জন্য নির্ধারিত চাঁদা ৫০ টাকা হলেও সদস্যদের নিকট থেকে ১০০০ টাকা নেওয়া হয় যাতে সর্বসাকুল্যে ৯৪০০০ টাকা আত্মসাৎ করা হয়। একই স্মারকের একাধিক ফরম বিক্রি করেও অর্থ লোপাট করা হয়েছে বলে দাবি তদন্ত কমিটির। এছাড়া বিশ^বিদ্যালয় হতে কর্মচারী সমিতিকে ৫০০০০ টাকা প্রদান করা হয়েছে যা সমিতির আয় বলে গণ্য হয় সে অর্থের হিসাব দিতে পারেন নি সাবেক কমিটির দুই নেতৃবৃন্দ। এছাড়াও মুজিব বর্ষে কর্মচারীদের একদিনের বেতনের সমপরিমান অর্থ কর্তন করা হয় যার রিপোর্ট সমিতির সাধারন সভায় প্রদান করা হয় নি এবং সে বিষয়ে কোনো সুনিদিষ্ট প্রমানও দিতে পারেন নি তারা। এভাবে সমিতির আয়কৃত ১,৪৪,০০০ টাকার কোনো সুষ্পষ্ট প্রমান বা নথি প্রদান করতে পারেন নি এবং তা আয় ব্যায়ের হিসাব খাতায় লিপিবদ্ধ করা হয় নি এমনকি সমিতির ব্যাংক হিসাবেও জমা প্রদান করা হয় নি।
এছাড়াও কর্মচারী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কে এম আরিফুজ্জামান সোহাগের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। কর্মচারীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বাধা প্রদান করায় উপাচার্যের দপ্তরের অর্ডারলি পিওন ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক কে এম আরিফুজ্জামান সোহাগের দপ্তর পরিবর্তনের দাবিও জানানো হয়। এছাড়া কর্মচারী সমিতির নেতৃত্বে থাকাকালীন গত বছরের ফেব্রুয়ারী মাসে কর্মচারী সমিতি আয়োজিত বার্ষিক বনভোজন বাবদ বিভিন্ন দপ্তর ও মহল থেকে সংগৃহীত অর্থ লোপাটের কারণে সমিতির চারজন সদস্য তৎক্ষনাৎ পদত্যাগ করেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত কর্মচারী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কে এম আরিফুজ্জামান সোহাগের নিকট জানতে চাইলে বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, আমাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পূর্ন মিথ্যা ও বানোয়াট। একটি দুষ্টচক্র মহল আমাদের হেনস্থা করার জন্য এ মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে। বিগত কমিটির সকল হিসাব আমরা তত্ত্বাবধক কমিটি ও নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির নিকট বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর আমরা কারো কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ নেই নি। যদি কোন নতুন সদস্য খুশি হয়ে আমাদের সমিতিতে কোন অনুদান দিতে চেয়েছিলেন সেটা আমরা গ্রহণ করেছিলাম। আমাদের পূর্বের কমিটি আমাদের নিকট মাত্র তিন হাজার টাকা বুঝে দিয়েছিল। আর আমাদের কমিটি সমিতিতে এক লক্ষ সাতান্ন হাজার টাকা অতিরিক্ত ভাবে রেখে দিয়েছি। এর মধ্যে আমরা বিভিন্ন মানুষের চিকিৎসার জন্য আড়াই লক্ষ থেকে তিন লক্ষ টাকা অনুদান দিয়েছি। তারপরে ও যখন আমাদের আবার হিসাব দেওয়ার জন্য বলেছেন আমরা আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে সেই হিসাব পুনরায় প্রদান করব।