ওয়াশিম আকরাম , যবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়(যবিপ্রবি)একটি নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে শিক্ষা,গবেষণা ও অবকাঠামোগত দিক থেকে উন্নয়নে অনেকটা এগিয়ে থাকলেও গত চৌদ্দ বছরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে বসানো হয়নি কোন ডাস্টবিন, নেই ময়লা ফেলার আলাদা কোন স্থান। সাধারণ শিক্ষার্থীসহ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যরা যেখানে-সেখানেই ফেলছে ময়লা, পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ময়লা আর্বজনাগুলো পোড়ানো হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশের ও শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এছাড়াও সম্প্রতি করোনা শনাক্তকরণে ব্যবহৃত সামগ্রী যেমন পিপিই, মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাফস, সহ নমুনার সংগ্রহের টেস্টটিউব ও অন্যান্য সামগ্রী একাডেমির ভবনের পিছনেই আগুন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ দূষিত করা সহ মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টির কারণ হতে পারে ।
আজ সকালে যবিপ্রবির ড.এম আর খান মেডিকেল ভবনের সামনে ময়লার স্তুপ আগুনে পোড়াতে দেখা যায়। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একাডেমিক ভবনের পিছনে দেখা যায় একই ঘটনা। কিন্তু একাডেমিক ভবনের পিছনে ময়লা আর্বজনা সহ সেখানে করোনা পরীক্ষার সামগ্রী পোড়ানোর প্রমাণ পাওয়া যায় । তবে কার নির্দেশে এগুলো পোড়ানো হয়েছে সেটা এখন পর্যন্ত পরিষ্কারকর্মীদের কাছ থেকে জানা যায়নি। এর আগে গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ডাস্টবিন তৈরী ও একাডেমিক ভবনের সামনের ময়লা সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়। এরপর ময়লা সরিয়ে নেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত ডাস্টবিন বসানো হয়নি।
উক্ত বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ কমিটির প্রধান ও পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মৌমিতা চৌধুরী বলেন, ময়লা পোড়ানোর বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না এবং কাজটি পরিবেশের জন্য মোটেও ঠিক হয়নি। তিনি জানলে এ ধরনের কাজ মোটেও সংগঠিত হত না। যারা এই কাজ করেছেন তাদেরকে লিখিত ও মৌখিক ভাবে জবাবদিহিতা করতে হবে। শুধু বিশ্ববিদ্যালয় নয় আমরা শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সচেতন নাগরিক হিসেবে চাই সারা পৃথিবীর পরিবেশ সুন্দর রাখতে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাস্টবিন না থাকার বিষয়ে মৌমিতা চৌধুরী আরও জানান, প্রতিটি বিল্ডিংয়ের সামনে ডাস্টবিন প্রতিস্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার কারনেই তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় খোলার আগেই ডাস্টবিন প্রতিস্থাপনের কাজটি সমাপ্ত করার চেষ্টা করব আমরা।
এই বিষয়ে যবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে ময়লা আর্বজনা সহ করোনা শনাক্তকরণে ব্যবহৃত সামগ্রী পোড়ানো একেবারেই কাম্য নয়।আমরা অনেকদিন ধরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ময়লা-আর্বজনা ব্যবস্থাপনা নিয়ে ভাবছি। বেশ কয়েকবার স্থানীয় প্রশাসনের সাথে কথাবার্তা হলেও কোন সমাধান এখন পর্যন্ত হয়নি। আমরা ইতিমধ্যে জাপানের একটি টিমের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের ময়লা- আর্বজনা ব্যবস্থাপনার বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি কিন্তু এটি একটি দীর্ঘ মেয়াদি কাজ তাই আমাদের আরেকটু সময় লাগবে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার আগেই আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভবন সহ শিক্ষার্থীদের হলগুলো পরিষ্কার করার কাজ শুরু করব।