মেহেরপুরের গাংনীতে সকল ইউনিয়ন পরিষদে স্থাপিত তথ্য-প্রযুক্তিভিত্তিক কেন্দ্র ‘ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার’ (UDC) গুলোর বিরুদ্ধে ধীরগতির সেবা, রশিদ ছাড়া লেনদেন, অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ করছে জনগণ।
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে সরকারি-বেসরকারি তথ্য ও সেবা পৌঁছে দিতে ২০১০ সালের ১১ নভেম্বর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ‘জনগণের দোড়গোড়ায় সেবা’ (Service at Doorsteps), স্লোগানকে সামনে রেখে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশের প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে চালু করা হয় ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার (ইউডিসি)। ইউডিসি থেকে গ্রামীণ জনগোষ্ঠী সহজে ও কম খরচে প্রায় ৬০ ধরনের সরকারি-বেসরকারি সেবা পাচ্ছে সাধারণ জনগণ। সেবার জন্য গ্রহণযোগ্য হারে সরকার নির্ধারিত ফি রয়েছে, যা থেকে উদ্যোক্তারা মাসে গড়ে ৪০-৫০ হাজার টাকা উপার্জনেরও সুযোগ পাচ্ছে। তারপরও বিভিন্ন অতিরিক্ত ফি আদায়সহ বিভিন্ন অনিয়মের আওতায় মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সকল ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার।
১৮ ডিসেম্বর ২০১৭ সালের স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, জন্ম বা মৃত্যুর ৪৫ দিনের মধ্যে নিবন্ধন বিনা মূল্যে, পাঁচ বছরের মধ্যে ২৫ টাকা, পাঁচ বছর পর থেকে ৫০ টাকা ও জন্ম তারিখ সংশোধনের জন্য ১০০ টাকা ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু সেবা গ্রহিতাদের অভিযোগ, নির্ধারিত ফি’র চেয়ে কয়েকগুণ বেশি টাকা আদায় করা হচ্ছে।
ভুক্তভোগীরা বলেন, সরকার নির্ধারিত ফি বাদেও অতিরিক্ত ২০০/২৫০ টাকা করে বেশি নেওয়া হচ্ছে। জরুরী প্রয়োজনে জন্ম সনদ উত্তোলন ও সংশোধন করতে গেলে মাত্রাতিরিক্ত অর্থ দাবী করছে ইউডিসি। এছাড়াও তারা আরো অভিযোগ করেন, ধীরগতির সেবা, অতিরিক্ত ফি আদায় ও কাজ শেষে লেনদেন রশিদ ও দেওয়া হচ্ছে না।
ইউপি চেয়ারম্যানরা জানান, শতভাগ স্বচ্ছতার সাথে আমরা কাজটা করার চেষ্টা করছি। ফি বেশি নেওয়া হচ্ছে প্রশ্নের জবাবে, ৮ং ধানখোলা ইউপি চেয়ারম্যান আখেরুজ্জামান বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ অতিরিক্ত ফি নিচ্ছে না। ইউডিসি উদ্দোক্তাদের বেতন ভাতা না থাকায় তারা বাড়তি অর্থ আদায়ে লিপ্ত হয়ে পারে।
মুঠোফোনে মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক ডা. মোহাম্মদ মুনসুর আলম খান জানান, সরকার নির্ধারিত ফি বাদে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরএম সেলিম শাহনেওয়াজ জানান, উপজেলা প্রশাসন থেকে ইউনিয়ন পরিষদকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সরকার নির্ধারিত ফি গ্রহণ করার জন্য, তারপর ও যদি অনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হয়ে থাকে তাহলে আইনত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।