বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ বঙ্গোপসাগরে আকস্মিক ঝড়ের কবলে পড়ে ট্রলার ডুবির ঘটনায় নিখোঁজ আরও এক জেলের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার অভিযানে পঞ্চম দিনের বুধবার দুপুরে বঙ্গোপসাগরের গভীরে কালীরচর এলাকা থেকে আরেক জেলের লাশ উদ্ধার হয়েছে। উদ্ধার হওয়া জেলের নাম মফিজুল শেখ।বাড়ি বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার সোনাইলতলা ইউনিয়নের বকুলতলা গ্রামে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত ৮ জেলের লাশ উদ্ধার হলো। এখোনো সন্ধান মেলেনি ৬ জেলে ও ৭ ফিশিং ট্রলারের। এর আগে গত ০৩/০২/২০২১ শুক্রবার রাতে আকস্মিক ঝড়ের কবলে পড়ে বাগেরহাটের পূর্ব-সুন্দরবনের দুবলার চর সংলগ্ন গভীর বঙ্গোপসাগরে ২৫টি ট্রলার ডুবে ২৭ জেলে নিঁখোজের ঘটনা ঘটে।
বৃহস্পতিবারও নিখোঁজ জেলেদের সন্ধানে নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, সুন্দরবন বিভাগ ও দুবলা শুঁটকি পল্লীর জেলেদের উদ্ধারে যৌথ অভিযান চলবে বলে জানিয়েছে বনবিভাগ। বাগেরহাট পূর্ব- সুন্দরবন বিভাগের দুবলা শুঁটকি পল্লী টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রহ্লাদ চন্দ্র রায় এ তথ্য নিশ্চিত করে মোবাইল ফোনে জানান, বুধবার দুপুরে বঙ্গোপসাগরের গভীরে কালীরচর এলাকা থেকে আরেক জেলের লাশ উদ্ধার হয়েছে। উদ্ধার হওয়া জেলের নাম মফিজুল শেখ। বাড়ি বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার সোনাইলতলা ইউনিয়নের বকুলতলা গ্রামে। বিকালে উদ্ধারকৃত লাশটি তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে
বাগেরহাটের প্রধান মৎস্য বন্দর কেবি ফিশারিঘাট মৎস্য আড়ৎদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলহাজ মো. আবেদ আলী শেখ জানান, শুক্রবার রাতে ঝড়ে বাগেরহাটের কচুয়ার বগা গ্রামের আনিস সরদারের এফবি মায়ের দোয়া ও একই গ্রামের ইলিয়াস হোসেনের এফবি মায়ের দোয়া নামের দুটি ফিশিং ট্রলার ডুবে ৮ জেলে নিখোঁজ হয়। এই দুটি ফিশিং ট্রলারের জেলে চারজন সহ বাগেরহাটের ৫ জেলের লাশ উদ্ধার হয়েছে। এখনো এই দু’টি ফিশিং ট্রলারে বাগেরহাটের ৪ জেলে নিখোঁজ রয়েছেন।
এই ৪ জেলের বাড়ি বাগেরহাট জেলায়। মোংলার কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের অপারেশন অফিসার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মামুনুর রহমান বলেন, আমাদের পিসিজিএস তৌফিক নামের একটি জাহাজ এবং দু’টি স্পিডবোট সাগরের প্রায় ২০ মাইল এলাকা জুড়ে তল্লাশি অভিযান অব্যাহত রেখেছে। আমরা এ পর্যন্ত ৫ জেলের লাশ এবং ৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করেছি। এছাড়া উদ্ধার করা দু’টি ফিশিং ট্রলার মালিকদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।এদিকে ঝড়ে ট্রলার ডুবির ঘটনায় নিহতদের বাড়ী চলছে শোকের মাতম! স্বজনদের হারিয়ে বাকরুদ্ধ প্রতিটি পরিবার ও এলাকাবাসী। নিহতদের বেশীরভাগের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে তাদের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করছেন।নিহতদের একজনের মাত্র আড়াই মাস এবং আড়াই বছরের দুটি সন্তান এবং একজনের স্ত্রী সাত মাসের অন্তঃস্বত্তা রয়েছেন।আজ সকালে বাগেরহাট জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জীনাত মহল,নিহত ও নিখোঁজ ৬ টি পরিবারকে নগদ ২০০০০ / টাকা সংসদ সদস্য শেখ তন্ময়ের পক্ষ থেকে নিহত ও নিখোঁজ ৬টি পরিবারকে কচুয়া উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা সারোয়ার ১০০০০/ টাকা ও স্হানীয় ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে খাদ্য সামগ্রী প্রদান করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্ম কর্তা জীনাত মহল ও উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা সারোয়ার ভবিষ্যতে সকল প্রকার সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দেন। এদিকে ডুবে যাওয়া ট্রলার থেকে বেঁচে ফেরা জেলেরা অভিযোগ করেন ট্রলারডুবির পরেই ট্রলার মালিকেরা জেলেদের কোনো খোঁজ না নিয়ে তাদের ট্রলার উদ্ধারে ব্যাস্ত হয়ে পড়েন এবং যারা বেঁচে আছে তাদের দিয়ে ট্রলারের যাবতীয় জাল দড়ি উদ্ধারের কাজ করান এই কারনে উদ্ধার বিলম্বিত হওয়ায় মৃতের সংখ্যা বেড়েছে।