নিউজ ডেস্কঃ ফেসবুক কীভাবে তথ্য সংগ্রহের কাজটি করে- এ নিয়ে ব্যবহারকারীদের মনে কৌতূহল কাজ করে।অনেক সময় দেখা যায়, ফোনে কোনো বিষয় নিয়ে কথোপকথন শেষে ফেসবুকে প্রবেশ করলে আলোচনার বিষয় সম্পর্কিত বিজ্ঞাপন সামনে আসছে।এটি অবশ্য কাকতালীয় হতে পারে।
তবে আসলেই ফেসবুক তার ব্যবহারকারীদের কথা শুনতে পায়?এই প্রশ্নের উত্তর ২০১৬ সালে জানিয়েছে
ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।তারা জানায়,স্মার্টফোনে ব্যবহারকারীরা যা বলেন তার সবকিছুই ফেসবুক শুনে না।
তবে ব্যবহার কারী সম্পর্কে অনেক কিছুই জানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি। কখনও কী বলতে যাচ্ছেন, কী করতে বা কিনতে যাচ্ছেন, তার সবকিছুই জেনে যায় ফেসবুক। এর কারণ ফেসবুক অনেক তথ্য সংগ্রহ করে।
বর্তমানে ফেসবুকের প্রতি ব্যবহারকারীদের আস্থা অনেক কমে গেছে। আস্থা কমে যাওয়ার কারণ খুঁজে বের করাও সহজ। ফেসবুক ব্যবহারকারীদের তথ্য নিয়মিত ফাঁস হচ্ছে। ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘিত হচ্ছে এবং হ্যাকিংয়ের মতো ঘটনা ঘটছে অহরহ। এ কারণে ফেসবুকের ওপর ব্যবহারকারীরা আগের মতো আস্থা রাখতে পারছেন না।
ফেসবুকের এসব সমস্যা থেকে সুরক্ষিত থাকতে অ্যাকাউন্ট ডিলিট করার পরামর্শ দেন অনেকে। অবশ্য ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ডিলিট করতে না পারলেও কিছু বিষয়ে আপনার সতর্ক থাকা উচিত। বিশেষ করে ফেসবুক আপনাকে কীভাবে ট্র্যাক করে এবং কীভাবে এটা থেকে সুরক্ষিত থাকা যায়, সেই বিষয়ে আপনাকে জানতে হবে।
অনলাইনে ফেসবুক যেভাবে ট্র্যাক করেঃ
মূলত অনলাইন ব্রাউজ করার সময়ে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ট্র্যাক করে। আইওএস অপারেটিং সিস্টেমের সর্বশেষ আপডেট ব্যবহারকারীদের এই ট্র্যাকিং থেকে সুরক্ষিত থাকার সুযোগ দিয়েছে। এ কারণেই গত ৬ মাস ধরে অ্যাপলের সঙ্গে ‘যুদ্ধ’ চলছে ফেসবুকের।
আইফোনে ট্র্যাক করা না গেলেও ব্রাউজারে ব্যবহারের সময় আপনার কার্যক্রম ঠিকই ট্র্যাক করে ফেসবুক। অবশ্য ফেসবুকের এই ট্র্যাকিং কার্যক্রম ন বন্ধ করার উপায় রয়েছে। এজন্য গত বছর ‘অফ ফেসবুক অ্যাক্টিভিটি’ নামের একটি টুল চালু করে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।
অফ ফেসবুক অ্যাক্টিভিটি টুল ব্যবহারের জন্য প্রথমেই ফেসবুকের ‘সেটিংস অ্যান্ড প্রাইভেসি’ অপশনে যেতে হবে। সেখান থেকে ‘সেটিংস’ অপশন ক্লিক করতে হবে। এরপর বাম দিকে ‘ইওর ফেসবুক ইনফরমেশন’ নামের একটি অপশন পাবেন। এখানে চাপ দিলে ‘অফ-ফেসবুক অ্যাক্টিভিটি’ অপশনটি আসবে। এ পর্যায়ে ‘অফ-ফেসবুক অ্যাক্টিভিটি’ অপশনে ক্লিক করার পর ‘ক্লিয়ার হিস্টোরি’ অপশনে ক্লিক করতে হবে।
ক্লিয়ার হিস্টোরির সঙ্গে সঙ্গে আপনার আগের যাবতীয় কার্যক্রম ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। এরপরও ফেসবুকে বিজ্ঞাপন বন্ধ হবে না। তবে আগের চেয়ে বিজ্ঞাপন দেওয়ার হার কমে আসবে।
ট্র্যাকিং ছাড়াও ব্যবহারকারী সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে ফেসবুক। নিজ অ্যাকাউন্টে দেওয়া জন্ম সাল থেকে বয়স জেনে যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি। এছাড়া অনলাইনে আচরণ পর্যবেক্ষণ করে পছন্দ সম্পর্কে ধারণা পায় ফেসবুক।
সবশেষে বলা যায়, ফেসবুক তার ব্যবহারকারীদের কথা শুনে না। ফেসবুকের নিজস্ব টুল এবং অ্যাপলের এটিটি সুবিধা ট্র্যাকিং থেকে সুরক্ষিত রাখতে সহায়তা করতে পারে মাত্র। তবে এগুলো ফেসবুককে তথ্য সংগ্রহ থেকে সম্পূর্ণ বিরত রাখতে পারে না।
সূত্র: ফোর্বস