স্টাফ রিপোটারঃ
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সোস্যাল মিডিয়া ফেসবুক,বিভিন্ন অনলাইন পোটালে বিভ্রান্তিকর পোস্ট ও ভুয়া, ভিত্তিহীন, মিথ্যা বানোয়াট নিউজ ও বক্তব্য দেয়ায় সরকারি অনুমোদনহীন পুরুষ নির্যাতন বিরোধী সোসাইটি নামের সংগঠন এর কথিত প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি রাকিবুল ইসলাম শামীমের নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের হয়েছে। মামলা নং- সাইবার ট্রাইবুনাল মামলা নং ২৪২/২১।
জানা যায়, ওই সংগঠন এর সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম তারেক মামলাটি দায়ের করেন। ঘটনার সুত্রপাতে জানা যায়, ২০২০ সালের ১৩ ই অক্টোবর লক্ষিপুর সদর উপজেলার সর্দারপাড়ার মাহবুব আলম সর্দার ও নুরজাহান বেগমের সন্তান রাকিবুল ইসলাম শামীম পুরুষ নির্যাতন বিরোধী সংগঠন নামে এই সংগঠনের নামকরণ করে অনলাইন ভিত্তিক কার্যক্রম শুরু করেন।
নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী দাবি করা এই ছেলেটি চট্রগ্রামের বায়েজিদ থানাধীন কোন একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করেন।
তার আপন মামা আবুল কাশেম, ভোলা সদরের চর কন্দ্রকপুর গ্রামের আমির হোসেন ও পারুল বেগমের সন্তান। যিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে চাকুরিতে আছেন। এই আবুল কাশেম আবার বন্ধু সংগঠন এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। সেনাবাহিনীতে চাকুরী করা অবস্থায় কি করে দুই দুইটি সংগঠন এর দায়িত্বে থাকতে পারে তা সেনাবাহিনীর প্রধান ই বলে দিবেন।
দুই মামা ভাগ্নে কোন এক নারীর কাছ থেকে প্রতারিত হয়ে পুরুষ নির্যাতন বিরোধী সোসাইটি গঠন করল। সভাপতি শামীম মুল হাতিয়ার আর মামা সহযোগিতায়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একাধিক পেজ খুলে প্রচারণা শুরু করলো, সারাদেশে সদস্য সংগ্রহ শুরু করলো।
সরকারের কাছ থেকে অনুমোদন নিতে পারলে বিভিন্ন সহায়তা পাওয়া যাবে এমনকি সারাদেশে সদস্য সংগ্রহ করার মাধ্যমে ভবিষ্যতে রাজনীতির মাঠে পা দিবে এসব চিন্তা ভাবনা শুরু করল।
ইন্টারনাল,এক্সটারনাল, ৬৪ গ্রুপ, আহবায়ক গ্রুপ, সদস্য গ্রুপ, কেন্দ্রীয় গ্রুপ, নির্বাহী সদস্য গ্রুপের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করে দিল।
৯ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি করলো, গঠনতন্ত্র জটিলতায় সিনিয়র দুই আইনজীবীকে বহিষ্কার করে দিল। নিজেকে সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী ঘোষণা দিয়ে একটি গঠনতত্ত্ব করে সরকারের অনুমোদন নেয়ার জন্য নামের ছাড়পত্র নেয়।
সংগঠন এর সরকার অনুমোদন না থাকলেও সারাদেশে আহবায়ক কমিটি অনুমোদন দেন অনলাইনের মাধ্যমে। যা নীতিমালা বহির্ভুত। সংগঠন এর অনুমোদন ছাড়া সারাদেশে কমিটি অনুমোদন করা নিয়ে কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রোটারিয়ান জহুরুল ইসলাম তারেক এর সাথে সভাপতি রাকিবুল ইসলাম শামীম এর মনোমালিন্য শুরু হয়।
মনোমালিন্যর এক পর্যায়ে ৩১ শে মে রাত এক টায় সভাপতি বরাবর নিজ হস্তে লিখিত একটি ইস্তফা পত্র নির্বাহী সদস্য গ্রুপে হস্তান্তর করেন সেক্রেটারি ও মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্বে থাকা জহুরুল ইসলাম তারেক। এবং পরবর্তীতে সোস্যাল মিডিয়ায় ঘোষণা দেন আজ থেকে ওই সংগঠন এর সাংগঠনিক কাজে তার কোন সম্পৃক্ততা নেই। ইস্তফা পত্রে এটাও উল্লেখ করেন যদি সংগঠন এর কোন ডকুমেন্টস কিংবা লেনদেন তার মাধ্যমে কোথাও হয়ে থাকে তাহলে সামনাসামনি বসে সেগুলো হস্তান্তর করে দিবেন। সভাপতিকে সকল কিছু বুঝে নেয়ার জন্য আহবান করেন। কিন্তু ওই সংগঠন এর সভাপতি ৯ জুন সকালে নিজ স্বাক্ষরিত তিন রকমের তিনটা প্যাডে সেক্রেটারিকে সাংগঠনিক শৃংখলা, অথনৈতিক কেলেংকারী সহ নানাবিধ কারন দেখিয়ে বহিষ্কার করেন। এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক সহ দুই একটি অনলাইন পোটালে বহিষ্কার সংক্রান্ত নিউজ প্রচার করেন। এরকম অবস্থায় জহুরুল ইসলাম তারেক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে একটি উকিল নোটিশ পাঠান। তাতে উল্লেখ ছিল ৭ দিনের মধ্যে এগুলোর সমাধান করে ফেসবুক থেকে না সরালে তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হবে। উকিল নোটিশ পাওয়ার পর শামীম আরও ক্ষিপ্ত হয়ে যায় এবং একের পর এক নানা ভাবে হুমকি দিতে থাকে এবং মন গড়া সংবাদ ও কুরুচিপূর্ণ তথ্য প্রচার করতে থাকে। এমতাবস্থায় তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হলো।
উল্লেখ্য যে, শামীম অনুমোদনহীন ভুয়া সংগঠন করে সারা বাংলাদেশ থেকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে নাম দেয়ার নামে জন প্রতি ৪-৫ হাজার টাকা আদায় করার ধান্দায় নেমেছিল। দুইদিন আগে সভাপতি শামীম পাব্লিক একটা পেজে মন্তব্য করতে গিয়ে বলে যে, ঢাকায় আগেও আমাদের অফিস ছিল না, এখনো নাই।
যদি অফিস নাই থাকে তাহলে সারাদেশে অফিসের ঠিকানা ব্যবহার করে কমিটি অনুমোদন করে কি ভিতরে ভিতরে ফায়দা লুটেছে?
এখন আবার নতুন করে ঢাকার ধানমন্ডি এলাকার একটি বাসার ঠিকানা ব্যবহার করছে অস্থায়ী অফিস হিসেবে।
সেখানে বিএমএফ টেলিভিশন এর অনুসন্ধানী প্রতিবেদক গিয়ে দেখতে পাই এরকম কোন রাস্তা কিংবা বাসা ওই এলাকায় নাই। তাহলে কি সারাদেশের মানুষদেরকে বোকা বানিয়ে লুটপাট করার ধান্দায় নেমেছে শামীম চক্রটি।
সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার এক্ষুনি উচিত এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া এবং খুব দ্রুত শামীমকে গ্রেফতার করলে আসল ঘটনা বের হয়ে আসবে বলেও অনেকেই মনে করেন।