রায়হান আবিদ,বাকৃবি প্রতিনিধি:
মৎস্য জরিপে সাধারণত একটি দেশের মোট মৎস্য উৎপাদন, মৎস্য ফার্ম, মাছ চাষির সংখ্যা, মাছ ব্যবসায়ীর সংখ্যা, মৎস্যখাদ্য ব্যবসায়ীর সংখ্যা, মৎস্য হ্যাচারির সংখ্যাসহ প্রভৃতির গণনা করা হয়। এই পরিসংখ্যানের ফলে দেশের মৎস্য সম্পদের সঠিক ব্যবস্থাপনা, মৎস্য প্রক্রিয়াকরণ, মৎস্য প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার, বিভিন প্রকল্প বাস্তবায়ন, রপ্তানিসহ নানা বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব হয়। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে মৎস্য জরিপে তথ্য সংগ্রহে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ না করায় অনেক ক্ষেত্রে ভুল তথ্য উঠে আসে। তাই মৎস্য সম্পদের সহজ এবং সঠিক পরিসংখ্যান পেতে দেশে প্রথম মেশিন লার্নিং নামে একটি প্রযুক্তি ব্যবহার করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের একদল গবেষক।
বৃহস্পতিবার (৪ আগষ্ট) সকাল ১১ টার দিকে ঢাকার রমনায় অবস্থিত মৎস্য ভবনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ‘হার্নেসিং মেশিন লানিং টু এস্টিমেট একোয়াকালচার প্রডাকশন এন্ড ভেল্যু চেইন পারফর্মেন্স ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক কর্মশালায় এসব তথ্য জানান প্রকল্পটির প্রধান গবেষক (বাংলাদেশ অঞ্চলের) বাকৃবির একোয়াকালচার বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল হক।
জানা যায়, প্রকল্পটি ইউএসএআইডি এর আওতাধীন ‘ফিড দ্যা ফিউচার ইনোভেশন ল্যাব ফর ফিশ’ এর অর্থায়নে আমেরিকার ‘মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটি’ কর্তৃক পরিচালিত। ওই প্রকল্পটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একোয়াকালচার প্রধান জেলা খুলনা, সাতক্ষিরা, বাগেরহাট, যশোর, বরিশাল, ভোলা, এবং গোপালগঞ্জ জেলা নিয়ে কাজ করছে।
কর্মশালায় অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল হক জানান, যে প্রক্রিয়ায় দেশে মৎস্য সম্পদের জরিপ করা হয় তা সেকেলে হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে পরিসংখ্যানে ভুল তথ্য চলে আসে। এমনকি তা অনেক সময়সাপেক্ষ। যা মৎস্য সম্পদের সঠিক ব্যবস্থাপনার অন্তরায়। সঠিক পরিসংখ্যানের জন্য আমরা মেশিন লার্নিং সিস্টেম ব্যবহার করেছি। যেখানে কোন এলাকার স্যাটেলাইট ছবির তথ্য ব্যবহার করে আমারা মাছচাষের সঙ্গে জড়িত জমির আয়তন নির্ধারণ করেছি। এই ফলাফল গুলোকে জরিপ হতে প্রাপ্ত মাছ ও চিংড়ির উৎপাদন, কর্মসংস্থান ও আঞ্চলিক অর্থনীতিতে একোয়াকালচারের গুরুত্ব ইত্যাদি তথ্যের সাথে সন্নিবেশিত করা হয়েছে। এর ফলে খুব কম সময়ে নির্ভুলভাবে মৎস্য জরিপ সম্ভব।
বাকৃবির মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আবুল মনসুরের সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান। বিশেষ অতিথি হিসেবে মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খন্দকার মাহবুবুল হক, ওয়ার্ল্ড ফিশের দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক পরিচালক ক্রিসটোফার রোস প্রাইস এবং বাকৃবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি একোয়াকালচার বিভাগের অধ্যাপক ড. এম. এ. সালাম উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রকল্পের প্রধান গবেষক (আমেরিকা অঞ্চলের) ও মিশিগান স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. বেন বেল্টন।