আহসান হাবীব/ জাককানইবি প্রতিনিধিঃ
পরীক্ষার দীর্ঘ ২১ মাস পরেও ফলাফল প্রকাশিত হয়নি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাককানইবি) অর্থনীতি বিভাগের একটি ব্যাচের। বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে মাস্টার্সে ভর্তি হওয়া ব্যাচটির ১ম সেমিস্টার পরীক্ষা ২০১৯ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর শুরু হয়ে শেষ হয় ২৯ অক্টোবর। সে-বছরই ২২ ডিসেম্বর শুরু হয় ২য় সেমিস্টারের ফাইনাল পরীক্ষা যা শেষ হয় পরের বছর ২৮ জানুয়ারি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনোটিরই ফলাফল প্রকাশ করতে পারেনি বিভাগটি।
২০১২ সালের ১২ই ডিসেম্বর অনার্সে ভর্তি হওয়া এই ব্যাচটির ক্লাস শুরু হয় পরের বছরের ২১ জানুয়ারি। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০১৬ বা ২০১৭ সালে অনার্স ও ২০১৮ সালে মাস্টার্স শেষ হওয়ার কথা থাকলেও মাস্টার্স ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হয় ২০২০ এর জানুয়ারিতে। কিন্তু এখনো ফলাফল প্রকাশ করতে পারেনি বিভাগটি। এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, পড়াশোনা করতে করতেই যদি চাকরির বয়সসীমা শেষ হয়ে যায় তাহলে আর পড়াশোনা করে লাভ কি! বিভাগের চেয়ারম্যান ও ভিসি কখনোই এই দায় এড়াতে পারেন না। সমস্যা আমাদের পিছু ছাড়ছে না। যদি এই অভিযোগ ইউজিসিতে জানানো যায় তবে তা-ই করবো।
এ বিষয়ে বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলামকে বারবার ফোন করা হলেও তার কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। বিভাগের অন্যান্য শিক্ষকদের এই প্রশ্নটি করা হলে তারা এড়িয়ে যান।
তবে অতিরিক্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. আব্দুল হালিম বলেন, ‘আমাদের কাছে এখনো ওই ব্যাচের পরীক্ষার কোনো তথ্য বা ফাইল এসে পৌঁছায় নি। আমাদের এখানে আসার ১৫ দিনের মধ্যে আমরা সব কাজ শেষ করি। এখানে ফাইল না আসলে আমাদের কিছু করার থাকে না৷’
এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কৃষিবিদ ড. হুমায়ুন কবির বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে এটাকে শিক্ষকদের গাফিলতি বলা যায় না। মূলত বিভাগের সাথে বিভিন্ন দপ্তরের সময়ের সামঞ্জস্যতা বজায় সম্ভব না হওয়ার কারণে একটু দেরি হতে পারে।’
তবে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ‘বিভাগের শিক্ষকদের দায়িত্বের প্রতি গাফিলতির কারণেই অর্থনীতি বিভাগে দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্যা কাটছে না। শুধু করোনার কারণে নয়, আমাদের এই সমস্যা অনেকদিন থেকেই। ২০১২ সালে অনার্সে ভর্তি হয়ে ৮ বছরেও মাস্টার্সের ফলাফল পাইনি, এটা ভাবাই যায় না। আর আমরা এই কথাগুলো ডিপার্টমেন্টে বলতেও পারিনা। দয়া করে নাম প্রকাশ করবেন না, তাহলে ফলাফলে প্রভাব ফেলতে পারে৷’
উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘এমন দীর্ঘসূত্রতা কখনোই কাম্য নয়। এই বিভাগের বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত এবং অতি দ্রুত ফলাফল প্রকাশ করার জন্য আমি বলে দিয়েছি।’
আহসান হাবীব