আহসান হাবীব/ জাককানইবি প্রতিনিধিঃ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্তঃকোন্দলের দরুণ দুই মাস যাবত আটকে আছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শক ও উপদেষ্টা নিয়োগ। এমনটাই অভিযোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক।
সর্বশেষ গত ২৩ এপ্রিল ২০২১ তারিখে ছাত্র উপদেষ্টা হিসেবে দুই বছর মেয়াদ শেষ করেন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. মো. শেখ সুজন আলী। জানা যায়, এর বেশ কিছুদিন আগে থেকেই ছাত্র উপদেষ্টা পদ দখলের জন্য তোড়জোড় শুরু করেন বিভিন্ন বিভাগের কয়েকজন শিক্ষক। এর মধ্যে লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালনা বিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আজিজুর রহমান, চারুকলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তপন কুমার সরকার, একই বিভাগের আরেক সহযোগী অধ্যাপক সিদ্ধার্থ দে, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমেদুল বারীর নাম উল্লেখযোগ্য।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বঙ্গবন্ধু নীলদল ও শিক্ষক সমিতি থেকে একাধিক শিক্ষকের নাম ছাত্র পরামর্শক ও উপদেষ্টা হিসেবে প্রস্তাব করায় এবিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে অনেকটা অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমানকে। তারা এক হয়ে একটি নাম প্রস্তাব করতে পারলে তাকে নিয়ে ভাবারও আশ্বাস দেন উপাচার্য। তবে এই সিদ্ধান্ত উপাচার্য নয়, বরং সিন্ডিকেট নিবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
কিন্তু রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কৃষিবিদ ড. হুমায়ুন কবির এবিষয়ে সংবাদকর্মীদের জানান, সিন্ডিকেট সভা এ দায়িত্ব উপাচার্যকে দিয়েছে। তিনি চাইলে দায়িত্ব প্রদান করতে পারেন। তবে কোনো কারণে তিনি অস্বস্তিতে পড়লে নিজে সিদ্ধান্ত না নিয়ে সিন্ডিকেট সভার মাধ্যমেও গ্রহণ করতে পারেন।
নিয়োগ নিয়ে উপাচার্য চাপে আছেন কি না এ প্রশ্ন করলে উপাচার্য বলেন, ‘এ নিয়ে কোনো চাপ নেই। সিদ্ধান্ত তো নিবে সিন্ডিকেট।’ তবে নিয়োগ দিতে কেন দেরি হচ্ছে এই বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন তিনি।
এদিকে গত ২৩ এপ্রিলের পর দুই মাস পেরিয়ে গেলেও ছাত্র উপদেষ্টা নিয়োগ না হওয়ায় ক্ষুব্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি বিভাগের অধ্যাপক বলেন, ‘নানাভাবে উপাচার্যকে বেকায়দায় ফেলে নিজেদের দাবিদাওয়া আদায়ে উঠেপড়ে লেগেছে শিক্ষকগণ, যেটা একেবারেই অপ্রত্যাশিত। শিক্ষার্থীদের স্বার্থই আমাদের মূল ভাবনার বিষয় হওয়ার কথা ছিল।’
নিলয় মাহমুদ রুবেল নামের এক শিক্ষার্থী আক্ষেপের স্বরে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে প্রত্যেকটা বিষয় নিয়ে দলাদলি আর রাজনীতি কাম্য নয়। তারা বিভিন্ন পদ দখল করার জন্য একাডেমিক দায়িত্বে অবহেলা করে। বেতনভুক্ত দায়িত্বশীল সবাই, নৈতিকতাসম্পন্ন নয়। শিক্ষকদের বিভক্তিতে উপাচার্য চাপে আছেন, আর শিক্ষার্থীরা ভোগান্তিতে। যা একেবারেই অপ্রত্যাশিত।’