নড়াইল জেলা প্রতিনিধি: নড়াইলের কামারগ্রামের এক কিশোরী গণধর্ষনের শিকার হয়েছে। ওই কিশোরীর পিতা বাদী হয়ে জেলা পরিষদের সদস্যসহ ছয়জনকে আসামী করে (১৫জুন) মঙ্গলবার দুপুরে নড়াইলের লোহাগড়া থানায় মামলা দায়ের করেন।একই দিন বিকালে পুলিশ এজাহার ভূক্ত তিন জন আসামীকে আটক করে আদালতে প্রেরন করেছেন এবং কিশোরীর ডাক্তারী পরীক্ষা করার জন্য নড়াইল সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছেন।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়,উপজেলার লাহুড়িয়া ইউনিয়নের কামারগ্রামের এক কৃষকের কন্যা ও সরশুনা দাখিল মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেনীর ছাত্রীর (১৩) এর সাথে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পার্শ্ববর্তী কাশিপুর গ্রামের আমিনুর শেখের ছেলে অন্তর শেখের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এর জের ধরে গত (৫জুন) অন্তর শেখ বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মোবাইল ফোনে ওই কিশোরীকে সন্ধ্যার পর বাড়ী থেকে ডেকে নিয়ে তুষারের ইজিবাইকে করে লাহুড়িয়া- কল্যানপুরের দিকে রওনা হয়।পথিমধ্যে অন্তর তার দুই বন্ধু মাধবহাটি গ্রামের নুর ইসলাম ফকিরের ছেলে লিকু ফকির ও কামারগ্রামের বাদশা শেখের ছেলে জামিরুল শেখকে ইজিবাইকে তুলে নিয়ে যায়।
তারা রাত নয়টার দিকে ভদ্রডাঙ্গা বাতাশি গ্রামের জোড়া ব্রীজ এলাকায় পৌছালে ইজিবাইক থেকে কিশোরীকে নামিয়ে প্রেমিক অন্তর শেখ,লিকু ফকির ও জামিরুল শেখ মেয়েটিকে পাটক্ষেতের মধ্যে নিয়ে মুখ বেধে জোরপূর্বক পালাক্রমে তিনজন ধষর্ণ করে। এ সময় ধর্ষনের দৃশ্য জামিরুল স্মাট ফোনে ভিডিও ধারন করে রাখে। ধর্ষণের ঘটনাটি কাউকে জানালে ওই ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল করে দেওয়া হবে বলে কিশোরীকে ভয় দেখায় ধর্ষকেরা। পরে তারা ওই কিশোরীকে অন্তরের ফুফাতো ভাই পার্শ্ববর্তি সরশুনা গ্রামের আজিজুল মুন্সীর বাড়ীতে নিয়ে রেখে চলে যায়। খবর পেয়ে গভীর রাতে কিশোরীর পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে বাড়ীতে নিয়ে যায়।
পরে ওই কিশোরী ধর্ষনের শিকার হয়েছে বলে পরিবারের লোকজনকে জানায়।ঘটনার পর নড়াইল জেলা পরিষদের সদস্য উপজেলার সরশুনা গ্রামের মিশাম শেখ ও কামার গ্রামের আশরাফুল শেখ ধর্ষনের বিষয়টি থানা পুলিশকে না জানিয়ে ৬০ হাজার টাকায় বিনিময়ে মিমংশা করে ফেলতে ওই কিশোরীর পিতাকে চাপ সৃষ্টি করে।এক পর্যায়ে ভয়ে কিশোরীর পরিবার চুপচাপ থাকে। পরে ঘটনা জানাজানি হলে ১০ দিন পর পুলিশের সহযোগিতায় কিশোরীর পিতা বাদী হয়ে আজ মঙ্গলবার (১৫ জুন) দুপুরে লোহাগড়া থানায় তিন ধর্ষক,দুইজন শালীসকারী ও ইজিবাইক চালকসহ ছয়জনকে আসামী করে মামলা করেন (মামলা নং- ১৪ তারিখ ১৫.৬.২১)।
পুলিশি এজাহারভুক্ত আসামী ধর্ষক অন্তর শেখ,লিকু ফকির ও ইজিবাইক চালক তুষারকে বিকালে আটক করে আদালতে প্রেরণ করে।এ ব্যাপারে জেলা পরিষদের সদস্য মিশাম শেখ জানান,ধর্ষণের বিষয়ে আমি মিমাংশা করতে কাউকে চাপ প্রয়োগ করিনি।আমাকে হয়রানী মূলক ভাবে আসামী করা হয়েছে।মামলার বিষটি নিশ্চিত করে লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ আবু হেনা মিলন বলেন,তিনজনকে আটক করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।এ ছাড়া ওই কিশোরীর ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য নড়াইল সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।