মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ধানখোলা ইউনিয়নের চিৎলা গ্রামে খেলার মাঠের অভাবে যুবসমাজ বিপথগামী হয়ে পড়ছে। মাঠের অভাবে তরুণরা শারীরিক ও মানসিক বিকাশের সুযোগ হারাচ্ছে, যা তাদের অনেককেই নেশার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদ মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, “এই তরুণরা ছিল অত্যন্ত প্রতিভাবান, কিন্তু খেলাধুলার অভাবে তারা এখন মাদকাসক্ত হয়ে যাচ্ছে। এটি আমাদের সমাজের জন্য খুবই উদ্বেগজনক।”
স্থানীয় শিক্ষক মোঃ রফিকুল ইসলাম (মাস্টার) বলেন, “খেলার মাধ্যমে শৃঙ্খলা এবং নিয়ম মেনে চলার শিক্ষা পাওয়া যায়। মাঠ না থাকায় ছেলেরা পথভ্রষ্ট হয়ে পড়ছে।”
যুবসংগঠক ও সাংবাদিক মামুন অর রশিদ বিজন বলেন, খেলার মাঠের অভাবে শিশুরা শারীরিক ও মানসিক বিকাশে পিছিয়ে পড়ছে। খেলাধুলার সুযোগ না থাকায় তারা মোবাইল ও টিভির প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে, যা তাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। খেলার মাঠ শিশুদের সুস্থ ও সামাজিকভাবে সক্রিয় রাখতে অপরিহার্য। এছাড়াও খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে চিৎলা একটি আদর্শ গ্রাম, বিগত সময়ে জাতীয় পর্যায়েও খেলেছে এই গ্রামের সন্তানরা। গ্রামে অবস্থিত বিএডিসি খামার, স্কুল-মাদ্রাসা ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বয়ে শিশুদের সুন্দর আগামী নিশ্চিত করা সময়ের দাবী।
খেলার মাঠ শুধু খেলাধুলার জন্য নয়, এটি শিশু-কিশোরদের মানসিক ও শারীরিক উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মাঠে খেলাধুলা করলে যুবকরা সুস্থ থাকে এবং সময় কাটানোর একটি নিরাপদ মাধ্যম পায়। কিন্তু চিৎলা গ্রামে এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে তারা খেলার সুযোগ পাবে।
মাঠের অভাবে অনেক যুবক সময় কাটানোর জন্য বিকল্প খুঁজছে এবং ধীরে ধীরে নেশার দিকে ঝুঁকছে। বেকারত্ব, অবসর সময়ের অপচয়, এবং বিনোদনের অভাবের ফলে তারা মাদকের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে।
স্থানীয় যুবকরা একত্রিত হয়ে খেলার মাঠের জন্য আন্দোলন শুরু করেছেন। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ক্যাম্পেইন চালু করেছে, যাতে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায়। তারা বিভিন্ন প্রকার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করছে, মাঠ নির্মাণের দাবিতে স্বাক্ষর সংগ্রহ করছেন এবং উপর মহলে পাঠিয়েছেন।
চিৎলা গ্রামে খেলার মাঠের অভাব কেবল যুবকদের শারীরিক স্বাস্থ্যকেই ক্ষতিগ্রস্ত করছে না, বরং এটি সমাজের নৈতিক মূল্যবোধ ও সংস্কৃতির ওপরও গভীর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। স্থানীয় প্রশাসনকে দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করতে হবে, যাতে যুব সমাজের মেধা ও প্রতিভার বিকাশ ঘটে এবং সামাজিক অবক্ষয় রোধ করা সম্ভব হয়।