মোসফিকা আক্তারঃ
আগের দিনে গ্রামে গঞ্জে সবচেয়ে বেশি মেলা বসতো। আয়োজিত ফিল দিন গুলি। কালের বিবর্তনে সব কিছু হারিয়ে যাচ্ছে। সাংস্কৃতিক ভাটিয়ালী বাউল গানের আসর বসতো। বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন মেলা বসত। মেলা বসতো সাধারণত স্কুল কলেজের মাঠ গ্রামের মন্দির, নদীর তীর বা বড় বৃক্ষের নিচে বিভিন্ন উৎসকে সামনে রেখে মেলার আয়োজন করা হতো।
এখন আর বসন্তি রং এর শাড়ী পড়ে তাজা লাল হলুদ গাঁদা ফুলের মালা খোপায় বা বেনীতে পরে মোঠো পথে তরনীদের ঘুরে রেড়াতে দেখা যাইতো। ছেলে মেয়েরা বায়না করতে মেলায় যাবে বলে।এই মেলায় তরুণ তরুণীরা অনেক সাজে নিজেকে সাজিয়ে তোলে। এক সময় মেলায় নাগরদোলা, সাকার্স যাত্রাপালা পুতুল খেলা উল্লেখযোগ্য ছিল।
সবাই মিলে উপভোগ করতো। গ্রামের মানুষ তাদের হাতের তৈরি মাটির খেলনা, পুতুল, কাঠের সাসগ্রীক ঘরের আসবাবপত্র, শামুক ঝিনুকের গহনা ইত্যাদির পসরা নিয়ে বসতো এই মেলায়।এখন আধুনিক প্রযুক্তির কারনে হাতের তৈরি জিনিস হারিয়ে যাচ্ছে। শীতের শেষে এই মেলায় উৎসব হতো। হরেক রকম খাবার দাবার ব্যবস্হা।থাকতো মেলায়। বারো মাঝে তের পার্বনের দেশ বাংলাদেশ।
সারা বছরই লেগে থাকত নানা উৎসব পালা-পার্বণ গ্রামে- গঞ্জেই সাধারণত সবচেয়ে বেশি মেলা বসতো। পৌষ- পার্বনের মেলা চৈত্র সংক্রান্তির মেলা হরেক রকমের পিঠা উৎসব, যাত্রা পালা ও লোক সাংস্কৃতিক বসন্তের মেলাগুলো জমে উঠত।শীতকাল যেন এক মেলার মৌসুম। সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো থেকে মেলাকে কেন্দ্র করে জারি- সারি ভাটিযালী বাউল গানের আসর বসতো। আঞ্চভিত্তিক বিভিন্ন ধরনের মেলার প্রচলন ছিল।
কালের বিবর্তনে সব হারিয়ে যাচ্ছে। গ্রাম থেকে হারিয়ে গেছে উৎসব। গ্রামে এখন আর বাসন্তি রঙের শাড়ি পরে তাজা লাল, হলুদ গাঁদা ফুলের মালা খোঁপায় বা বেনীতে পরে মোঠো পথে তরুণীদের ঘুরতে বেড়াতে দেখা যায় না।ছেলে – মেয়ে রা বায়না করে না নাগরদোলা চড়ার জন্য সার্কাস যাত্রাপালা কিংবা পুতুলনাট্য দেখার জন্য। ধর্মান্ধ গোষ্টগুলোর চাপে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সরল জীবনে নেমে এসেছে মোর অমানিশা।গ্রামীণ মেলাগুলো হারিয়ে যাওয়ার লোকজ ঐতিহ্যগুলোও ক্রমেই হারিয়ে গেছে। ঐতিহ্যবাহী ও মেলার জায়গা কেড়ে নিয়েছে শহরে বানিজ্যিক মেলা।এর ফলে দেশজুড়ে ছাড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ঐতিহ্যের সব উপকরণ ও লোকজ উপাদানগুলো কালের বিবর্তনে বিনীন হয়ে যাচ্ছে। মেলার কারুশিল্পীদের শিল্পকর্ম করা হাতের তৈরি বিভিন্ন উপাদান বিক্রি করা হতো।
কাঠের পুতুল, মাটির পুতুল, নকশী কাঁথা, শীতলের পাটি,তামা কাঁসা,ও পিতলের কারুশিল্প। বাঁশের কারুশিল্প, কাঠের সামগ্রী, ঘরের আসবাবপত্র, শামুক ঝিনুকের গহনা এখন বিলুপ্তপ্রায়। আধুনিক প্রযুক্তির কারণে হাতের তৈরি জিনিস হারিয়ে যাচ্ছে। আর্থিক সংকটে এই কারুশিল্পীরা এখন অস্তিত্বের সংকেটে ভুগছেন। গবেষকরা বললেন, বাংলার এই মেলাগুলো যেমন সংস্কৃতির পরিচয় বহন করে তেমন এই মেলাকে কেন্দ্র করে স্হানীয় পন্যের পসারা বসতো।এই মেলা গুলো বড় অর্থনৈতিক দিক ও ছিল।মেলাগুলো বিলুপ্তের কারণে অর্থনৈতিতেও এর প্রভাব পরেছে।