শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধিঃ করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ফান্দাউক গ্রামের সুমন আচার্য্য’র সৎকার করতে এগিয়ে আসেনি নিজ গ্রামের কেউ!
জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর থানার ফান্দাউক গ্রামের সুমন আচার্য্য (৩৮) শুক্রবার বিকেল ৫টা ৪৫ মিনিটে ঢাকার ডিএনসিসি হাসপাতালে করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যান। তিনি ২ বছরের এক ছেলে ও ৬ বছরের এক কন্যা সন্তানের বাবা।
অবশেষে নিরুপায় হয়ে যোগাযোগ করেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা দেহ সৎকার কমিটির সাথে, সুমনের সৎকারে এগিয়ে আসে তারা।শনিবার সকালে শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয় শ্রীমঙ্গল পৌর শ্মশানে।
মৃত ব্যক্তির স্বজন রনি আচার্য্য জানান, ঢাকা থেকে মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর থানার গ্রামের বাড়ি ফান্দাউকে নিয়ে এলে পাড়া-প্রতিবেশী সবাইকে ডাকা হয়। কিন্তু কেউ সাড়া দেয়নি। নিরুপায় হয়ে তিনি
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল দেহ সৎকার কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং শ্রীমঙ্গল দেহ সৎকার কমিটি মরদেহ নিয়ে পৌর শ্মশানে নিয়ে আসতে বলেন।
এরপর তিনি নিজে লাশ নিয়ে শ্রীমঙ্গলে আসেন। শনিবার সকাল ৯টার দিকে শ্রীমঙ্গল দেহ সৎকার কমিটির সনজয় রায় রাজু, সুখ দেব, দিবস মজুমদার, বাবলু আচার্য্য, ছোটন চৌধুরী, অর্জুন দাশের নেতৃত্বে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়। করোনার উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর কারণে তার জন্মস্থানে দাহ সৎকার করা হয়নি। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা দেহ সৎকার কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ভানুলাল রায় বলেন, মানুষ একটা ভুলের স্বর্গে বাস করছে। জীবিত করোনা রোগী আর মৃত করোনা রোগীর মধ্যে যে ব্যবধান আছে সেটা মানুষে বোঝে না। এই কথাটা সবার জানা উচিৎ। জীবিত করোনা রোগী ভয়ানক ও বিপজ্জনক! কিন্তু মৃত করোনা রোগী ৩ ঘণ্টার পর বিপজ্জনক নয়। মৃত করোনা রোগী ৩ ঘণ্টার পর যে কোন লোকে তাদের পারিবারিক শ্মশানে শেষকৃত্য করতে পারবে। তবে, ঐ পরিবারের যদি কেউ জীবিত করোনা রোগী থাকে তাহলে তাদেরকে দূরে রাখা ভালো।
তিনি বলেন, শুক্রবার রাত ১টার দিকে বাবলু আচার্য্য নামে একজন আমাকে ফোন দিয়ে মৃত ব্যক্তির ঘটনা জানায়। তখন আমি তাকে বলেছি যে, আমাদের দেহ সৎকার কমিটির সাথে আলাপ আলোচনা করে গ্রিন সিগনাল দেওয়ার পর তুমি লাশ নিয়ে চলে আসবে। কিন্তু সে এ কথা না শুনে রাতেই লাশ নিয়ে পৌর শ্মশান ঘাটে চলে আসে। শনিবার সকালে সনজয় রায় রাজুসহ অনেকেই উপস্থিত থেকে শেষকৃত্য সম্পন্ন করেছে।