জাককানইবি প্রতিনিধিঃ ২০২০ সালের ২৬ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ৬ই ফেব্রুয়ারিতে শেষ হয় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ৩য় বর্ষ ১ম সেমিস্টার পরীক্ষা। পরীক্ষা শেষ হওয়ার ১৮ মাস পেরিয়ে গেলেও বিভাগটি ফলাফল প্রকাশ করেনি।
পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশে এত বিলম্ব কেন জানতে চাইলে ওই পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ড. আতিজা দীল আফরোজ এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘এটি ফোকলোর বিভাগের আভ্যন্তরীণ ব্যাপার। আপনি জানতে চান কেন?’ শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে জানতে চাওয়া বললে তিনি বলেন, ‘তাহলে শিক্ষার্থী আমার সাথে কথা বলবে, আমি শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলবো।’
এই সেশনের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ‘এমনিতেই দুই বছর থেকে আটকে আছি তারপর প্রায় দুই বছর হলো পরীক্ষার রেজাল্ট পাচ্ছি না। এবিষয়ে বিভাগীয় প্রধানকে বললে তিনি বলেন পরীক্ষা কমিটির সভাপতি জানে, আবার পরীক্ষা কমিটির সভাপতি বলেন বিশ্ববিদ্যালয় আগে খুলুক। সবার ভিতরে চাপা ক্ষোভ ভয়ে কেউ কিছু বলতে পারে না। শিক্ষকদের আবহেলায় আটকে আছে আমাদের রেজাল্ট।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘তাদের অপারগতার জন্য আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে মানসিকভাবে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। যদি আমার কিছু হয় তাহলে কি বিশ্ববিদ্যালয় এর দায়ভার নিবে? যেখানে অন্যান্য ডিপার্টমেন্ট বহু আগেই সকল ফলাফল দিয়ে দিয়েছে। রেজাল্ট না দেয়ায় সেশনজটে আটকে আছি। এতদিনে অনার্স শেষ হওয়ার কথা ছিল এতদিনে৷ আমাদের সেশনের অনেকেরই অনার্স করোনার আগেই শেষ।
এ বিষয়ে ফোকলোর বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. বাকীবিল্লাহ বলেন, ‘আমি বিভাগীয় প্রধান হিসেবে আমার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছি। এখন পরীক্ষা কমিটির সভাপতি হিসেবে যিনি দায়িত্বে আছেন তিনি এই বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারবেন।’
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবির বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে ফোকলোর বিভাগের সাথে কথা বলেছি। করোনা পরিস্থিতির জন্য তাঁদের বিভাগের ফলাফলে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। এখন দপ্তরসমূহ খুলে গেছে, কাজেই দ্রুততম সময়ের মধ্যে তা প্রকাশের ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ এই বিষয়ে উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমি খুব দ্রুতই দেখব।’
এছাড়াও বিভাগটিতে রয়েছে দীর্ঘ সেশনজট। তবে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সেশনজটের নেপথ্যে শিক্ষকদের কোন্দল, রাজনীতি বা অন্যান্য বিষয় নয়, দায়ী কেবল ফলাফল প্রকাশে বিভাগটির দীর্ঘসূত্রিতা। শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে ইন্টার্নাল মার্ক দিতে স্বজনপ্রীতি, চেহারা দেখে নম্বর প্রদান ও পছন্দের শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকারের।